https://www.facebook.com/FlagOfTawheed/videos/1348169955243652/
ভ্যাঁপসা গরমের দিন। শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাওয়ার জার্নি। লোকাল বাসের জার্নি। বেশ খানিক ক্ষন দাঁড়িয়ে এবং বেকায়দায় মানুষের ধাক্কা-গুঁতো খাবার পর সিট পেয়েছেন। বসেছেন, কিন্তু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের চাপ, সামনে পা রাখার জায়গার অভাব এবং তীব্র গরমের কারনে এখন চিন্তা করছেন দাঁড়িয়ে থাকাটাই মনে হয় ভাল হতো। বাস ভর্তি মানুষের ঘামের গন্ধ। বাতাস ভারি খিস্তিখেউর, ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাঁটি আর যাত্রীদের নানা বিক্ষিপ্ত কথোপকথনে।
.
মাথা ঘোরাচ্ছে। তৃষ্ণা পাচ্ছে। পরিস্থিতিটা সুখকর না...
.
এমন অবস্থায় মনে করুন পাশের যাত্রী আপনাকে সুন্দর বোতল এগিয়ে দিয়ে বললোঃ ভাই খান, শরবত। ভালো লাগবে।
.
সাথে কাগজে মুড়িয়ে কিছুটা আচারও দিল। টক খেলে নাকি মাথা ঘোরা কমে, তাই।
.
এমন অবস্থায় আপনি কি করবেন?
.
আপনার তৃষ্ণা আছে, স্বস্তির দরকার আছে। সত্য। তবে এটাও সত্য যে আপনি জানেন বাংলাদেশে অনেক বাসে এমন আমন্ত্রনে সারা দিয়ে অনেকক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে পেয়ে, ঢুলুঢুলু চোখে নিজেকে আবিষ্কার করেছে বিপর্যস্ত এবং অ্যাটলিস্ট সেই দিনের জন্য সর্বসান্ত অবস্থায়। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে মরে মানুষ মারাও গেছে।
.
সুতরাং এই দুই সত্যকে বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়, এই আমন্ত্রনে সাড়া দিয়ে যদি বাটপাড়ির শিকার হন তবে এর দায়ভার অনেকাংশেই আপনার উপর বর্তায়। একইভাবে গুলিস্তানের ফুটপাথ থেকে বেশ দাম দিয়ে মোবাইল ফোন, অথবা ভ্রাম্যমান ক্যানভাসারের কাছ থেকে ক্যান্সারের অব্যার্থ ওষুধ কিনে যদি আবিষ্কার করেন আপনি ভালো মানের জোচ্চুরির স্বীকার হয়েছেন – সেক্ষেত্রেও দায়িত্ব কিছুটা আপনার উপর আসে।
.
কেন?
.
কারন হল, যদিও এই কাজগুলো সাধারনভাবে ভুল না, কিন্তু যেহেতু আপনি জানেন বাসের সহযাত্রী, গুলিস্তানের মোবাইল কিংবা ক্যানভাসারের ক্যান্সারের ওষুধের বেলায় বাটপাড়ির ব্যাপক সম্ভাবনা আছে – তাই এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন না করা আপনার ভুল। আর তাই আপনি, আমি, আমরা - স্বাভাবিক ভাবেই এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করি।
.
.
ইসলামের বিরুদ্ধে কাফির-মুশরিকরা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। হাজার বছর ধরে। কখনো এই ষড়যন্ত্র সামনে আসে ইবনে সাবার রূপ ধরে, কখনো মির্জা গোলাম, কখনো বা মুভ ফাউন্ডেশানের রূপ ধরে। চেহারাগুলো বদলায়, ধরন বদলায় কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে কুফফার ও মুশরিকিনের চক্রান্ত অব্যাহত থাকে।
.
বর্তমান সময়ে এই চক্রান্ত বাস্তবায়নের জন্য পশ্চিমারা কৌশল গ্রহন করেছে – ইসলামকে বদলে দেয়ার। নিজেদের তৈরি করা এক কাটছাঁট করা ইসলামকে প্রচার করার। আর এই কাজে তারা মুসলিমদের ভেতরের কিছু লোককে – কিছু আলেম, ইমাম, উস্তাদ, দাই, সেলেব্রিটি, লেখক, “ইসলামিক আন্ট্রাপ্রোনোর” –দেরকে কাজে লাগাচ্ছে। এই লোকগুলোর কাজ হবে “নতুন ফিলোসফি, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, ইসলামের শান্তির বাণী” – ইত্যাদি নাম দিয়ে পশ্চিমাদের তৈরি করা ইসলাম প্রচার করা।
.
এসবই জানা কথা। কাফিররা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই এসব করছে। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ https://tinyurl.com/z25rozh)
.
এই সব তথ্য পাবলিকলি অ্যাভেইলেবল থাকার পরও এখন যদি আপনি এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে উদাসীন হন, কিংবা “ভালোটা গ্রহন খারাপটা বর্জন”-এর নীতির দোহাই দিয়ে এমন ব্যক্তিদের সাফাই গান যাদের বক্তব্য সরাসরি শারীয়াহ এবং আহলুস সুন্নাহর ইজমার সাথে সাংঘর্ষিক, তাহলে দোষটা কার?
.
যদি এসব তথ্য হাতের নাগালে থাকার পরও আপনি যাচাই না করেন, তাহলে দায়ভার কার? শুনতে ভালো লাগলেই, অথবা উপস্থাপনা ভালো হলেই যে কোন বিষয়ে যে কারো যেকোন কথা গ্রহন করে ফেলেন – শারীয়াহ এই ব্যাপারে কি বলে সেটার দিকে না তাকিয়েই তাহলে দোষটা কার? যদি দলিলকে উপেক্ষা করে আপনি ব্যক্তিত্বের অনুসরণ করেন তাহলে জবাবদিহিতা কার?
.
যদি আপনি এমন পথ দিয়ে হাটেন যা কাঁটাওয়ালা ঝোপঝাড়ে ঘেরা তাহলে অবশ্যই আপনি পায়ে কাঁটা লাগার ব্যাপারে সতর্ক হবেন। যখন আপনি কাঁদাভরা রাস্তা দিয়ে হাটেন তাহলে আপনার কাপড়ে কাঁদা লাগছে কি না, প্রতিটি পদক্ষেপের সময় আপনি সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। যখন ক্যানভাসারের কথা শুনবেন তখন আপনি খুব সতর্কতার সাথে প্রতিটা কথা যাচাই করে দেখবেন।
.
একজন মুসলিমের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার ইমান। তার তাওহিদ। একজন মুসলিমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল তার দ্বীন। যখন আপনি জানবেন এই দ্বীনকে বিকৃত করার চক্রান্ত বাস্তবায়নে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করা হচ্ছে – তখন কি আপনি একটু সতর্ক হবেন না? যখন আপনি জানবেন মুসলিমদের ভেতরের কিছু মানুষকে ব্যবহার করে মুসলিমদের ইমানকে, দ্বীন ইসলামকে বিকৃত করার কাজ চলছে – তখন কি আপনি হিসেব করবেন না কার কাছ থেকে আপনি এই দ্বীন গ্রহন করছেন? প্রশ্নটা যখন তাওহিদের, তখন কি প্রতিটি কথা যাচাই করে দেখাটাও খুব বেশি কিছু?
.
নাকি পায়ে কাঁটা লাগা, কাপড়ে কাঁদা লাগা, নকল ওষুধ বা মোবাইল কিনে ধরা খাওয়া কিংবা অজ্ঞান পার্টির কবলে পরে কিছু টাকা হারানোর চাইতেও তাওহিদের হেফাযত করা আমাদের কাছে তুচ্ছ হয়ে গেল?
.
প্রত্যেক মুসলিমের কি উচিৎ না ইসলামের বিরুদ্ধে চলমান এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সচেতন হওয়া এবং সাধ্যমত অপরকে সতর্ক করা?
.
#তাওহিদের_পতাকা
#FlagOfTawheed
#হকপন্থি_আলেম