All formatting gone. Somebody added title twice.
নামটা কি মগধ আছিল? কুশানরা কইত মগা। ওর থিকা পণ্ডিতে করছে মগধ। কিন্তু কুশান ও পণ্ডিত দুয়োই এই তল্লাটে পয়লা বিদেশী আছিল। বাঙ্গালী কি কইত তা ডাহা বুঝা যায় কতগুলা নাম থিকা। নামটা মনে হয় আছিল মঙ্খালা কিংবা মঙ্খাল কিংবা
মগ্গালা কিংবা মগ্গাল কিংবা এই ছান্দের কিছু।
মঙ্খালা ও মগ্গালা বাঙ্গালা নামের রূপান্তর যে ছান্দগুলায় ম ব হয় নাই। মোংগল নামের ন ধ্বনি ছোট। মুঘল নামে তা একবারেই বাদ পড়ছে। তাই মনে হয় মঙ্খাল মগ্গাল হইছে। মূল কথা এই যে শেষে একটা ল আছিল। কেউ জিগাইতে পারে এই ছান্দগুলা ধারণা করা যায় ক্যান?
পয়লা ভাবা যাইক মগ্গালীপুত্ত তিছ্ছার কথা। উনার কাছ থিকা সম্রাট আশোক বৌদ্ধধাম নেন। এইটা আন্দাজ সাপটা যুগের আগ ২৬০৷ মেলা লোক ভাবে যে ইনিই সংস্কৃত বৌদ্ধ সাহিত্যের উপগুপ্ত আছিলেন। ভাবা যায় উতর ভারতে উপগুপ্ত নাম দিয়া মগ্গালী নামটাকে ঢাকা হইছে। মগ্গাল নামটাতে তাই পালি জবানের পভাব আন্দাজ করা যায়৷
মাঙ্খালীপুত্ত গোসালা নামে আযিভিকা দলের আদিগুরুর নামের রূপান্তরগুলা লখলে লুকান সত্য আরো ছাফ হয়। উনার বাবাকে মাকখালী নামেও কওয়া হয়। সুতরাং বুঝা গেল যে একটা ছোটো ন ধ্বনি আছিল।
যদিও মগধ নাম বানান হইছে কিছু সংস্কৃত লিখায় মেকালা নামও ব্যাভার হইছে। পুরাণে দেখা যায় পুশ্যমিত্রর কালে মগধরে মেকালা কওয়া হইত। টলেমীর লিখায় কিংবা ইরিথরাইয়ান সায়রের রহনামা নামের লিখায় মগধ নাই। মেগাললাই জাতি আছে।
আন্দাজ সাপটা যুগের আগ ২৪০ আম্রা মৌর্য বংশের তাবে মৌখারীগো কথা পাই। ওরা আছিল মগধের আশপাশের এক যোদ্ধা গোষ্ঠী। গুপ্ত যুগে মগধের পচিমে গয়ায় ওরা টান পদে আছিল। ওরা মনে হয় মাগার আছিল। মাগার যোদ্ধা জাতি আছিল। মাগার বৌদ্ধের ভক্ত আছিল। তাই বোধ হয় ওরা গয়ায় আইছিল৷ আবার মৌখারী রাজারা নিজেগো বর্মণ কইত তাও তিব্বত সংযোগ দেখায়।
মাগাররে মাঙ্গারও কয়। এখন এই তল্লাটে র ও ল এর সমস্যা মনে রাখলে বুঝা যায় আদিত মাগার মোংগল বুঝাইত। মনে হয় ওদেরই এক পুরান ঢেউ বাঙ্গাল নামটা দিছে। পানচালা নামটাও ওরা ঘটাইছে।
আম্রা মেলা জায়গায় কইছি পঞ্জাব, বঙ্গারু, পিঙ্গলা নামগুলা আদি বাঙ্গালগো যে শাখা উতরপচিম থনে আইছে ওরাই ঘটাইছিল। কিন্তু পরে কোন আর্যদল শব্দগুলারে নিজেগো করছে বিকার কইরা। আর্য মোংগল মিশাল মেলা আগেই পচিমে শুরু হইছিল। এক ধরনের মিশাল হইছিল তুর্কমেনিস্তানের দিহিস্তানে। দেহি নাম যে দাস ও থাই (ডাই) এই দুইটা নামের রূপান্তর তা ভাবার কারণ আছে। আজো থাই গোষ্ঠী অহোমরা বাঙ্গালগো পরশী। মাঝখানে আখর পাংরা৷
আলতাই পাহারগুলার সাথে থাইগো কি সংযোগ তা নিয়া তক্ক থাকলেও একটা জিনিস লখ করা যায়। আলতাই থনে ডাইনে১ দুইটা পথ আছিল সিনযিয়াং-তিব্বতের দুই পাশ দিয়া। পচিমেরটা গেছিল তুর্কমেনিস্তানে। আর পুবেরটা গেছিল ইউন্নানে।
[১। ডাইনে মানে দখিনে।]
এখন পেগুর কথা। নামটা কি পেগু আছিল? তা আরেক ইতিহাস। পরে আরেক দিন কই। মোট কথা এই যে মগধ ও পেগু পুরান বাঙ্গালভূমের দুই তল্লাট আছিল।
abu
Feb 5, 2019, 8:45:37 PM
মগধ ও পেগু: পুরান বাঙ্গাল মুলুকের দুই তল্লাট (২)
পেগু নামটার ইতিহাস জটিল। পেগু পোর্তুগীজ পভাবে বিকার। হালে একে বাগো কয়। কাছেই মেগায়ে। তাই মনে হয় নামগুলা পাঙ্খো কিংবা মগ নামের বিকার ৷
পাঙ্খো এই তল্লাটে মগ থিকা পুরান আছিল। নয়া পরিষাণ পাঙ্খো ও মগের পুরান ঢেউ দুইটাকেই বাংলাদেশের দিকে ঠেইলা দিছে। পুছ করা যায় শেষের ল কি হইল? আরেক জায়গায় আম্রা কইছি ল পালটাইয়া র হওয়ায় ও রয়ের হরেক উচ্চারণ হওয়ায় কোন আর্যদলের কাছে ল টা হারাইয়া যায়।
চীনের ইতিহাসে মোঙল নামটা পাওয়া যায় ট্যাং বংশের নথীতে। চীনে মগগো মিয়াও কয়। চীনের নথীতে মিয়াওগো কথা পাওয়া যায় কমসেকম আন্দাজ সাপটা যুগের আগ ২৫০ থিকা। মাঝ এশিয়ার ইতিহাসে লোককথায় মোঙ হজরত নুহের (আঃ) পোলা ইয়াফিসের এক পোলা আর মোঙল মোঙ্গের ভাই তুরকের ৬ঠ কিংবা ৪থ বংশধর (দিশা: তাবাকত-ই-নাসিরির তরজমায় রিভারটির নোট)। মাঙ্গালী খান মোঙলের এক নাতির নাতি ৷ এই লাইনের সবাই মোঙলগো রাজা আছিল।
তাই মনে হইতে পারে মঙ বা মগ মোঙল থিকা পুরান। তবে এইটা বাইরের লোকের চোখে। মনে হয় মোঙল মোড়ল আছিল। আরেক জাতি ওগো মুরুব্বিয়ানা মাইনা নিব ক্যান? ওরা ল নিয়া মাথা ঘামায় নাই। পরে জবরদস্ত মোঙলগো দেখা পাইছে। ততদিনে মিয়াওরা হাইরা গিয়া চীনের ডাইনে ও দখিন এশিয়ার নানা জায়গায় ছড়াইয়া পড়ছে। বাংলাদেশ থিকা দূরে নামটা নিজেগো মাঝে হ্মোঙ (Hmong) হইছে।
মিয়াওরা লি গোষ্ঠীর কাছে হারছে। মনে হয় এই লি আদিতে তুর্কীদেশ থনে আহা হিট্টাইট-লুইয়ান আছিল। আগেও কেউ তা লখতে পারে কারণ হিট্টাইট নামের সাথে খিতাই (Cathay) নামটার মিল আছে। একি জাতি আফগানিস্তানে লোদি ( পরে লোহানি ), ভারতে নন্দা, বাঙ্গালায় নুনিয়া, নুহানি গোষ্ঠীগুলার আদিলোক আছিল।
এরাই দখিনপচিম বাংলার নাম লাদাম বা রাঢ়, গুর্জারগো আহনের আগে গুজরাটের নাম লতা ঘটাইছিল। পুরান ইরানে এগো লুত কওয়া হইত। লুতের সাথে পদ্মের মিল আছে, যেমতে লোটাস ও লতা। চীনে আহা পচিমাগো কখনো লি শেষনাম দেওয়া হইত। তবে চীনে পদ্মসম্ভবের এক নাম যে লিয়ানহুয়াসাং তার কারণ হয়তবা আলাদা।
বাঙ্গালায় পয়লা হিট্টাইট-লুইয়ান, ওগো সম্পর্কিত হিট্টাইট-লুছিয়ান (লাক, রাক্ষস) ও পরে হিট্টাইট-পালাইয়ানগো মাঝে মগের মিশাল ধুনা গেলেও, মগগো পভাব কইমা যায়।
বাঙ্গালার লাক বা রাক্ষসই মনে হয় আরাকানের নাম ঘটায়। বৌদ্ধ ইতিহাস নকলনবিশরা এককালে ডরেও রাক্ষস রাজাগো বিরিখ কইতে পারে। তারানাথের লিখায় রাজা গোপালের বাবা আছিল এক গাছ দেবতা। আবার তারানাথ পালগো আগে চান্দ রাজাগো দেখাইছে। এই চান্দ রাজাগো এক পুবপুরুষ আছিল "বৃক্ষচন্দ্র" মানে বিরিখচান্দ। প্রফেসর রমেশচন্দ্র মজুমদার তারানাথের দেওয়া চান্দ রাজাগো আরাকানের রাজমালার কোন এক রূপান্তরের রাজাগুলা সন্দ করছেন।২
২। R. C. Majumdar, "Lāmā Tāranātha's Account of Bengal." IHQ, vol. XVI June 1940 no. 2, 219-238.
আন্ধারমানিকে মানুষখেকো যে লোকগুলার ছবি এক ইউরোপীয় আঁকায় পাওয়া যায় ওগো জংলি মনে হয় না। আন্ধারমানিক হইল আন্দামান-নিকোবর। বরিশালের আন্ধারমানিক গাঙের কিনারায় মগ আসত সুযোগ পাইলেই। বরিশালের বাকলা, যেইটা আছিল বাগলা, শেষের ল দেখায়, পুরান মগগোও দেখায়।
পুরান বাঙ্গালায় রুখ মানে গাছ ৷ পালি রুখ্খা ৷ চাকমা রুখ্যাং মানে বন ৷ সিলেটে হাছন রাজা গাইছে "বজরা যে পুরান অইছে রুককাঠ পচেগেছে"। রাক্ষসের সাথে তাই গাছের মিশাল হইতে পারে।
ওইকালের আরাকানের পসার পেগু যাবৎ আছিল কিনা জানা না গেলেও কওয়া যায় চান্দ রাজারা বাঙ্গালা ও আরাকান দুয়োই শাসন করছে। আরাকানের হদ্দের কাছেই পেগুতে ওইকালে বোধ হয় মন গোষ্ঠীর আবাস আছিল। এইখানে চারটা কথা মনে রাখতে হয়।
এক, চান্দ রাজারা মনগো থিকা মেলা আগুয়ান আছিল।
দুই, চান্দ রাজারা এক আন্তর্জাতিক বৌদ্ধধাম ভিত ধামরাজ্যের রাজা আছিল। যে বৌদ্ধরা মগধের আশপাশে আছিল ফা হিয়েন লিখছে ওরা একেবারেই মাংস খায় নাই, মদ খায় নাই, ওগো পাকছাফের গিয়ান আছিল যে গুণগুলার বিবেচনায় ফা হিয়েনের দেখা বৌদ্ধগো মাঝে ওরা সেরা আছিল। এইখানে হজরত ওমরের (রাঃ) এক কথা মনে হয় ৷ লোকে কয় উনি কইছেন, "আমাগো মাঝে তারাই সেরা যারা প্রাকইসলামী যুগেও সেরা আছিল"।
কুসংস্কারে বাচা গোষ্ঠী কখনো নিজেগো ধাম আপগ্রেড করতে পারে না।
পদ্মসম্ভব আফগানিস্তানের লোক আছিলেন। বোধিধর্মা (দা মো) যে আফগানিস্তান-পাকিস্তান হদ্দ এলাকার লোক আছিলেন এই ছান্দ সম্ভবনার বিচার প্রফেসর হাসান দানী করছেন।
তিন, পেগুর মন বুদ্ধের বিশেষ ভক্ত আছিল।
চার, মনকে যে মেলা সময় তিলাং কওয়া হইছে ওর কারণ কি ওইকালে ওগো গায়ের রং কিছুটা বাঙ্গালগো মত আছিল? মন আগে চীনে আছিল। ডাই (থাই) মনকে ঠেলতে ঠেলতে ইউন্নান থিকা খেদায় ৷ চীনে মনের অবশিষ্টকেও মিয়াও ভাবা হয়।
সুতরাং বাঙ্গালা-আরাকানের চান্দ রাজাগোর সাথেই পেগুর লোক মনগো সুবাদ বেশি থাকার কথা। মোটকথা যে মন পেগুতে আছিল সাপটা যুগ ৫০০ সালের দিকে ওগো সাথে ম্রানমাগো থিকা মগ ও বাঙ্গালের সুবাদ বেশি আছিল। ম্রানমার সাথে ওগো সুবাদ ইংরেজ আমল থিকা হইছে।
"বাঙ্গালী মলিন হইল মগ সংস্পর্ষে" কথাটা ইংরেজ আমলের গুজামিল। বাঙ্গালী পধান সোঁতের বিষয়ে এর কোন গুরুত্ব নাই। মোঙল, যে রক্তে জনম নিছে চেঙ্গিস খান, সেই রক্তের লোক নিজেগো তিব্বতের দেমাগিরিভুগা জাতগোষ্ঠীর একদল ভাবব এইটাও ইংরাজ আমলে হইছে Divide and convert, check the spread of Truth with lies এই তত্ত্বের খাতিরে।
আরেকটা ব্যাপারে মনে হয় মনের সাথে বাঙ্গালার গাঢ় সংযোগ আছিল। কওয়া হয় বোধিধর্মা ( যার কথা উপরে কইছি ) লংকাবতার লিখছেন বা ঘটাইছেন। এতে মনে হয় উনি আফগান লংকাহ গোত্রের আছিলেন। এককালে লংকাহ গোত্র আফগানিস্তানের লাঘমান (লামঘান) তল্লাটের বাসিন্দা আছিল। তবে লংকাহ নামটা লামঘান কিংবা লাঘমান থিকা না কোন লঙ্গর ( বন্দর ) থিকা পাইছে তা কওয়া সোজা না। পরে ওরা মুলতানসহ পুরা সিন্ধে রাজত্ব করছে। লোকে মানত লাঘমানে আছিল লামেকের (রাম) কবর।
লামেক ভক্তির পসার হয় মাকরানের বেলা শহরের কাছে রামবাকিয়া নামে পুরান এক বন্দরে যা পচিম এশিয়ার সাথে নৌবাণিজ্যের লাই খ্যাত আছিল। হালে লাহুত-ই লামাকান নামে এর একটা ভাগ আছে।
এককালে মাকরানে বৌদ্ধধামের পসার হয়। ৭১১ সালে আরবরা বনি আরামের (আরামাইয়ান) নাসিখ বংশধরগো বৌদ্ধ পায়। নাসিখ ভক্তগো ঠিক পুরাপুরি বৌদ্ধ মনে হয় না কারণ এরাই বাঙ্গালায় আইসা নাথ হয়। মনে হয় নাথ পভাব উপমহাদেশের নয়া আর্যগো মাঝে জৈন ও বৌদ্ধধাম উঘারানের পিছনে আছিল। পরেও বৌদ্ধগো মাঝে ধিয়ান (zen) নাথ ঘটাইতে পারে ৷ এইগুলা সিন্ধ ও বাঙ্গালার পষ্ট ছাপ। যেমতে বাঙ্গালার নাথ সাহিত্যে গুপিচান্দের গুরু আছিলেন হাড্ডিপা যিনি আছিলেন সিন্ধের বলপা।
কোনো নাথদল কিংবা সুরিয়া থনে আহা সাবিউন রামুইয়া পুবে রামাই পণ্ডিত ও সেতাই পণ্ডিত ঘটাইছে। ঘুরে যে জাতি পয়লা ইসলাম নিছে ওরা আছিল শীষের গোষ্ঠী। সুতরাং সাবিউন চরিত রামুইয়া ও সিথিলকে ( হজরত শীষ আঃ) লাঘমানে হয়তবা এক ছান্দে জানা আছিল ৷ সুলতান মাহমুদ খোয়াবে দেখছে লামেক হজরত নুহের বাবা। খোয়াবে মুসলিম চরিত সন্দ করলেও ইতিহাসের অভাবে আসল সংযোগটা বুঝে নাই ৷
হুয়েন সাং রামবাকিয়ার আশপাশকে লাং-কিয়ে-লো কইছে। তাই লংকাহ গোত্রের কথা আসে। দ্য সেন্ট মার্টিনও এই ব্যাপারে লঙ্গা গোত্রের কথা ধুনছে। যারা রাম সুবাদে পরেরকালের আজগুবি গপ্পের পাধান্য দেয় ওরা কালক্রমের ব্যাপারে ভুলে করবই। কিছু সাবিউন বাখানে রিম্মনের আশেকমাশুক সিথিলকে মেয়ের রূপে বয়ান করা হইছে।
লামেকের গপ্প মাকরানের বৌদ্ধগো মাঝেও ঢুকছিল তা ধুনা যায়। বৌদ্ধ দশরথ জাতকার গপ্পে রামাপণ্ডিত, লক্ষণ, সীতা দুই ভাই এক বোন। ওদের বাবা ওগো বার বছর লুকাইয়া থাকতে কইছে ৷ নয় বছর পর বাবা পয়ান করলে বাবার ভক্ত রামাপণ্ডিত বার বছর নিবাসন পুরা করল। মনে হয় লামেকের গপ্পে লারসার ইলামাইট রাজা রিমসিনের নাম জড়াইছে ৷ সিন মানে চান্দ ৷ রিমসিনের ভাই আছিল ওয়ারাদসিন।
আন্দাজ ১০২ সালে পাট্টানি যার একাংশ হালে থাই দখলে আছে, ওই পাট্টানিতে লংকাসুকা রাজ্যের পত্তন হয়। পেগু থিকা পাট্টানির দূরতা বেশি না।
মনরা নিজেগো এককালে রামান কইত। রাম, লংকা, বৌদ্ধ, সায়রের দিয়ান্তরী নৌবাণিজ্য সবি পাওয়া গেল। হইতে পারে মন এককালে বাঙ্গালার রামুতে আছিল। আর রামু পুবে রামবাকিয়ার ট্রানস্লেট।
নয় শতকের দিকে ফারসের বণিকগো কাছে বাঙ্গালার পরিচয় আছিল রামি/রুহমি যেমতে ইবনে খুরদাদবিহ, একজন ইরানী নও-মুসলিমের নাতি, রামি/রুহমির কথা কইছেন। যেহেতু আরবরা ফারসের বাণিজ্যের মিরাশ পাইছে আম্রা শুধু ইরানী ভূগোলবিদের কথা কইলাম। মেলা গবেষক ভাবছে রুহমি আছিল রামু ও তার আশপাশ ৷
আম্রা এখন শুধু মনগো বৌদ্ধ ভাগটাই দেখি। যে ভাগটা মুসলিম হইয়া রামু, পেগু ও পাট্টানিতে ছড়াইয়া আছে, যাগো পুবপুরুষ রামবাকিয়া, রামু, পেগু, লংকাসুকা আন্তর্জাতিক নৌবাণিজ্যে ঘুরাঘুরি করছে তাগো ছাফ দেখি না।
আরাকানের পুবে পাগান। সন্দলাগা "হ্মাননান ইয়াজাউইন" (কাঁচের দালান কালপঞ্জি) পানচালার সাথে এর সুবাদ দেখায়। এই গপ্প ইংরেজ আমলে ইন্দোফিলগো যোগ করা ভাঁওতাবাজি হইতে পারে। তবে আম্রা মেলা জায়গায় কইছি পানচালা পঞ্জাব ও বঙ্গারুর মত পচিম দিক দিয়া আহা বাঙ্গালী ঢেউ ঘটাইছে।
হাচিনসন৩ মগগো পুছ করলে ওরা কোইথ্থনে আইছে মগরা জানায় ওরা মগধ থনে আইছে। হাচিনসন মনে করছে মগধের কথা ওরা চাকমাগো কাছ থিকা শিখছে। কার ক্রেডিট কে পায়!
[৩। R. H. Sneyd Hutchinson, "An Account of the Chittagong Hill Tracts," 1906.]
৩০০ সালের দিকেও মগধের কাছে নাগা আছিল। সমুদ্রাগুপ্ত নয়জন নাগা রাজাকে বিহার ও তার পচিমে হারায়। ১৫০ সালের দিকে মাঝ বাঙ্গালায় আছিল কুকিনাগা (টলেমীর Coconagae)। কাশী কোশল্যা নামগুলা মনে হয় দেখায় ওই তল্লাটে মেলা আগে খাসিয়ারা থিতু আছিল। নাগা, কুকি, খাসিয়া এগো এখন শুধু পুবে দেখা যায়।৪
[৪। ইন্দোনেশিয়ার আচেহ রাজ্যের মূল জবানের সাথে খাসিয়া জবানের মেলা মিল আছে। বাঙ্গালার সুলতানী আমলে নৌবাণিজ্যে বাঙ্গালা, আচেহ ও মালদ্বীপ এই তিন দেশের গাঢ় সুবাদ আছিল।]
আসলে নয়া আর্যরা বাঙ্গালার ডেমোগ্রাফি ইংরেজ আমলের (1769-1770) মতই পৈচাশিকভাবে পালটাইছে যেইটা পুরান আর্যরা করে নাই। যার লাই ইতিহাসের খাওয়া খাওয়া ভাগগুলা পুরা কষ্ট। মূলকথা মগ সাপটা যুগের শুরুতে মগধে থাকলে তাজ্জব হওয়ার কিছু নাই।
আসলে হাচিনসনের কালে মগকে মার্মা বানানের চক্রান্ত শুরু হইয়া গেছে। যদিও হাচিনসন লিখছে জাত পুছ করলে ওগো পয়লা উতোর আছিল মগ।
ইংরেজ আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে মগের দুইটা দল আছিল। এগো একদল আরাকান থনে পরে চট্টগ্রামে ঢুকে। এগো রাজাকে কওয়া হইত বোহমঙ। ১৮৯১ সালে বোহমঙয়ের তালুক আছিল ২০৬৪ বর্গমাইল আর অপর মগ রাজার তালুক আছিল মাত্র ৬৫৩ বর্গমাইল। ১৮২৩ সালে এক বোহমঙ পাঙ্খো সর্দার রাং ছুলুমকে হারায়। মনে হয় এই হারায় পাঙ্খো উজার হয়।৫
[৫। পাঙ্খো সুবাদে একটা নোট নিচে দিলাম।]
১৮৫২ সালেও পেগুর লোকজন বর্মীগো থিকা আলাদা আছিল। ওইকালে ইংরেজরা যখন পেগু দখল করে, পেগুর লোকজন বর্মীগো বিরুদ্ধে ইংরেজগো পক্ষ নেয়।
আরাকান যে বাঙ্গালার ভাগ আছিল তার আরেকটা দলিল এই যে ১৮১৮ সালে মিয়ানমারের রাজা আরাকানের রাজাগোর ওয়ারিশি স্বত্বে মুর্শিদাবাদ মিয়ানমারকে দিয়া দেওয়ার লাই হেস্টিংসকে কয়। ওই রাজা ১৭৮৫ সালে আরাকান দখল করছিল আর ১৮১৬ সালে অহোমদেশ দখল করছিল।
উনিশ শতকের শেষদিকে ইংরাজরা এক মগরাজাকে ওর পেরায় পঞ্চাশজন সঙ্গীসহ ঢাকায় আনে। ওরা ছোট মগবাজার৭ ঘটায়।
[৭: ছোট মগবাজার মনে হয় ভুল। এইটা মনে হয় মগটুলি হইব। বড় মগবাজার, ছোট মগবাজার ও মগটুলি ঢাকার তিন মহল্লা আছিল।]
ওইকালে চীনের ছিং রাজা বলছাড়া হওয়ায় তিব্বত ও ইউন্নানে ঔপনিবেশিক ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের কিছু কুকাম বৌদ্ধধাম ও চিড়াচিড়ি বাঙ্গালার সাথে সংশ্লিষ্ট গোত্রগুলাকে ছোঁয়া দেয়। এই কুকামগুলার ফলে বাঙ্গালার স্বার্থের খুবি ক্ষতি হয়। আর তার জের এখনো আছে।
১৮৯২ সালে শরৎচন্দ্র দাস বৌদ্ধ টেষ্ট সোসাইটি গড়ে। এই লোকটাকে ইংরেজরা তিব্বতে চীনের বিরুদ্ধে একটা পিশুনদল তৈরী করতে পাঠাইছিল। কিন্তু হঠাৎ কইরা উতর বার্মা দখল করার কিংবা দখলে রাখার দরকার হওয়ায় ইংরেজরা ওকে ফিরাইয়া আইনা পিশুনগো কথা চীনের কাছে কইয়া দেয়। শরৎচন্দ্রকে ওর কামের লাই মেলা টাকা দেওয়া হয়। ও চট্টগ্রামে জাইনামা পাহাড়ে (দেবপাহাড়) ১৪০০ বিঘার করমুক্ত সম্পত্তি যোগাইয়া পাহাড়ের উপরে একটা মন্দির বানায়।
অপরদিকে উতর বার্মা ও লাওস ফ্রান্সের সাথে ভাগাভাগি করায় বেখুশী থাই রাজাকে খুশী করার লাই ইংরেজ ভারতে বুদ্ধের ছাই আবিষ্কার কইরা ওই ছাই থাই রাজাকে দিয়া মোঙল বুরিয়াত পণ্ডিত দরজিয়েভের আড়পারে বৌদ্ধ নেতা হিসাবে থাই রাজার মান বাড়ায়।৮
৮। ইংরেজগো মনে হয় ভয় আছিল দরজিয়েভ রুশগো তিব্বত নিয়া আসব।
পেগু থনে আন্ধারমানিক পেরায় দুইশ মাইল। ১৯৪৭ সালের ২৬ মে ইন্ডিয়া ও বার্মা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় বাঙ্গালা ভাগ হইলে আন্ধারমানিক ওরাই পাইব যারা কোলকাতা পাইব। ওইকালে সব বাঙ্গালী সুহরাওয়ার্দিহর সাথে না থাকায় বাঙ্গালীর একটা বিরাট ক্ষতি হইল।
হালে কিছু দেশী লোক কয় মগের মুলুক বাগধারাটা নাকি সাক্ষ্য দেয় মগনামটা বাঙ্গালী ঘিন্না কইরা দিছে। মঙ সু প্রু যেমনে মগগো মারমা কইতে চাইছিল ওরা তেমনে মগকে মারমা কইতে চায়।
সব লোককে ভালো পাওয়া আর নয়া কিছু কওয়া দুয়োই ভালো গুণ। তবে নজর টানার লাই আবোলতাবোল কইয়া ঝগড়া ফ্যাসাদ বান্ধান খুবই খারাপ দোষ। হাজার বছরে গড়া নামধাম শান মোজাইক খানখান কইরা ভিটা নরম কইরা নরম ভিটায় কেইছা ঘুকানের চেষ্টায় যারা আছে তাগো থিকা এগো তফাৎ লোকে কেমতে বুঝব?
বাঙ্গালী মগকে ঘিন্না কইরা রাজধানী ঢাকার মাঝখানে এক তল্লাটের (আসলে দুই তল্লাট ছোট ও বড়) নাম মগবাজার রাখছে? মগ মঙ নামটার সহজ কোমল বাংলা ছান্দ।
ম্রানমার (মারমা, বর্মণ) কথা আগে কইছি। এর মানে এই না যে বাঙ্গালীর মাঝে বর্মণ নাই। বর্মণ রাজা এককালে কামরু ও কামতা শাসন করছে। গোয়ালপাড়া থনে এগো একভাগ রংপুরে আইছে। তবে বর্মণ রাজার চাকরগুলাকেও লোকে বর্মণ কইতে পারে। ম্রানমা, মারমা, বর্মণ, বর্মী - নামগুলা দেখায় এই দেশে একি নাম কত তাড়াতাড়ি ভিন হইতে পারে।
১৪০৬ সালে বর্মীরা আরাকান দখল করলে মগ রাজা মিন সও মন বাঙ্গালায় পালাইয়া আহেন এক ঢাউস দলসহ। সুলতান গিয়াসুদ্দীন আজম শাহ রাজধানীতে রাজার বাস করার ব্যবস্থা কইরা দেন। উড়িষ্যা হদ্দে রাক্ষস ও জৌনপুর হদ্দে শরকীগো ডোলের লাই সুলতান আরাকানে বাঙ্গালী সেনা পাঠাইতে পারেন নাই ৷ রাজা ২৪ বছর বাঙ্গালায় কাটান। ১৪৩০ সালে বাঙ্গালার সুলতান জালালুদ্দীন মুহাম্মদ শাহ (যদু) মিন সও মন রাজাকে আবার আরাকানের সিংহাসনে বসান।
১৫১১ সালে পোর্তুগীজ চাকুরে ও ওষুধ নিয়া কাজ করছে, টম পিরেস, যে বাঙ্গালীকে ঘিন্না করত, লিখছে আরাকান রাজ বাঙ্গালার তাঁবেদার (vassal) যদিও কখনোবা বিদ্রোহ করছে।
বাঙ্গালায় মুঘল আক্রমণ শুরু হইলে মগরাজা থানের শাসক জামাল খান পন্নিকে হারাইয়া ১৫৮১ সালে চট্টগ্রাম দখল করে। ওরা ১৬৬৫ সাল যাবৎ চট্টগ্রাম দখলে রাখে। মনে হয় পোর্তুগীজ তাড়নায় শান্তি উজার হইলে থানের সওদাগর ও বাসিন্দারা সেনাছাড়া দুর্বল শাসকের চাইতে মগ তাঁবে পছন্দ করছিল। সেনাছাড়া কারণ জওয়ানরা বেশিরভাগি পচিম হদ্দে মুঘলগো রুধার লড়াইয়ে ব্যস্ত আছিল।
নিজেরা একধরনের মুসলিম হওয়ায় কিংবা (ওই পাদ্রীগো কথা) মুসলিম রায়তগো খুশী রাখার লাই মগ রাজারা কলমা খোদাই করা পয়সা বাইর করত ১৪৭০ সাল থিকা। পরে ১৬২৬ সালে পোর্তুগীজ পাদ্রীগো পভাবে তা বাদ দেয়।
এই লিখা মগ ও বাঙ্গালের সুবাদের পুরা ইতিহাস না। আম্রা শুধু আমাগো কথার লাই দরকারী পসঙ্গ এইখানে লিখছি। পুরা ইতিহাস অবশ্যই জরুরি যারা ঢাকার পতিরক্ষা নিয়া ধুনব।
১৫৯৪ সালে মগরাজা সেলিম খান (মেঙরাজ দাগগি) সোনারগাঁওয়ের কাছে একটা দূর্গ বানায়। ও রাজমহলে মুঘল সেনাপতি মানসিংয়ের কাছে বহু ভেটের নিছনি ডালাসহ একদল দূত পাঠায় পেগুরাজের বিরুদ্ধে সহায় পাইবার আশায়। ১৫৯৯ সালে বহুদিন পর মগ ও রোহিঙ্গারা পেগু দখল করে। ওইকালে কেদার রায় মগের সাথে যোগ দেয় পোর্তুগীজ রুধার লাই।
১৬১৬ সালের দিকে মগরা সন্দ্বীপ শাসন করছে। ১৬১১ সালেই মুসা খানকে পরাস্ত করার আগে মুঘল সুবেদার ইসলাম খান মগ নেতা অনিকফারাঙ্ককে সন্দ্বীপ দিতে চাইছিল কিন্তু স্বাধীন সুলতান মুসা খানের বাধায় অনিকফারাঙ্কের বহর ইসলাম খানের কাছে যাইতে পারে নাই। ১৬১২ সালে বাঙ্গালী নেতাগো দমণ করার পর মুঘলের সাথে মগের সম্পর্ক খারাপ হয়।
১৬২৫ সালের দিকে মগ ও পোর্তুগীজ এক হয়। ১৬২৬ সালে মগরাজা পয়সায় কলমা খোদাই বন্ধ করে। ১৬২৯ সালে মগ আবার সন্দ্বীপ আক্রমণ করলে মগধরায় দিলার খানের কাছে হাইরা যায়। এক হাজার বন্দী মগ মুসলিম হইয়া নিজের ইচ্ছায় সন্দ্বীপে বাস নেয় ( দিশা: ওয়ালিউল্লাহর "জীবন জাগার কাহিনী")।
এইটা মুসলিম যুগে দোসরা বার মেলা মগ বাঙ্গালী মূল সোঁতের সাথে মিশার ঘটনা। তেসরা বার ঘটে ১৬৩৮ সালের দিকে। আর তার মাঝে কোন গোত্রগত জিঘাংসা আছিল না।
মঙ্গত রায়, অভ্যুত্থানে মারা যাওয়া মগরাজার চাচা, ঢাকা আহেন নয় হাজার মগ ও মন সহ। এই মনগো তিলাং কওয়া হয় দখিনভারতের থনে আহা তেলিঙ্গা বংশের লোকগো সাথে মিশাইয়া। এরা মুসলিম হইয়া ঢাকার মগবাজারে বাস নেয়।
বাঙ্গাল, মগ ও মন আবার মিশা গেল। এই তিনটা নজির তো সেইদিনের কথা। আমাগো কথা মেলা আগেও ওরা এক আছিল। ইতিহাসের ঘাত পতিঘাতে নামগুলা ভিন হইছে মাত্র।
মোটকথা মগধের মত আরাকান ও মগদেশ পেগু বাঙ্গালার তল্লাট আছিল। বাঙ্গাল দায়িত্ব না নিলে এই তল্লাটগুলায় শান্তি রাখব কে?
======================শেষ==========================
পাঙ্খো সুবাদে যোগ করা নোট:
নানা কারণেই মনে হয় চীনের ও চীন হদ্দের ভা (WA) গোষ্ঠী ও পাঙ্খো এক লোক আছিল। হালে চীন হদ্দে ভা স্বাধীন দেশ থিতু। যদিও মিয়ানমার স্বীকার করে না। এক সময় ইয়াবা মাদক বানাইয়া বদনাম পাইলেও এখন চীনের সহায় ভা স্বাধীন দেশ তাড়াতাড়ি আগাইয়া যাইতেছে। বাংলাদেশের মেলা লোক দেখতে ভাগো মত।
ভা স্বাধীন দেশের রাজধানীর নাম পাঙ্খাম (Pangkham)। মনে হয় পাঙ্খো আগে দূরে নৌবাণিজ্যে জড়িত আছিল। তামিল জবানে বঙ্খাম (vangkam, বাংলায় v নাই) জাহাজ বুঝায়। ভাগো আরেক নাম আছিল Beilong ও Benglong। ছিং বংশের (১৬৪৪-১৯১২) রাজত্বের চীনা নথীতে Benglongরে Benlong কওয়া হইছে। যদি এমতেই হয় যে ভা নামটা পাহাড়ের লোক বুঝাইতে ব্রাও থিকা আইছে তালে নামটা বাইরের লোকের দেওয়া মনে হয়। আগে মিয়ানমারে ভাগো দেশ আছিল মাংলন (Mang Lon)। দখিনপুব চীনরে কওয়া হইত মাঙা।
ভাগো লগে রিয়াং (Reang) নামে এক পুরান চীনা গোষ্ঠীর সুবাদ আছিল। ঐ যে রাঙ্গামাটির পাঙ্খো সর্দার রাং ছুলুমের কথা আগে কওয়া হইছে ঐ রাং মনে হয় একি নাম। রাঙ সীসা-টিন। পুরাকালে মেসোপটামিয়ার বণিকরা রাঙ খুজতে বাঙ্গালায় আইলে ওরা মনে হয় পাঙ্খোগো সহায় হয়। পরে রংপুর লেপচাগো দখলে গেলে পাঙ্খো হয়ত উতর বাঙ্গালা ত্যাজে। গোয়লপাড়ায়ও এক রাঙ্গামাটি আছিল। কওয়া কঠিন কোন কালে রং বরফঢাকা পাহাড়ের লোক বুঝাইছে। রং ও Beilong তুলনা করা যায় কারণ যদিও bei মানে উতর (উত্তর) bai মানে সাদা যা বরফের রং।
কিছু পাঙ্খোকে ইন্ডিয়ানাইজড করার ছলে নামের বিকার কইরা বনযোগী বানান হয়।