ভারতের ঐতিহাসিক দ্বীনি বিদ্যাপীঠ দারুল উলূম নদওয়াতুল উলামা লাখনৌয়ের উসতাযুল হাদিস হযরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ যায়দ মাযাহেরি সাহেব (দা.বা.), যাকে ভারতের অন্যতম বিচক্ষণ আলিম ও বুযুর্গ মনে করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন মাওলানা সাইয়্যেদ সিদ্দিক আহমাদ বান্দাবি রহ.-এর সংশ্রবে থেকে আত্মশুদ্ধির মেহনত করেন, এবং উনার কাছ থেকেই খেলাফত লাভ করেন। উনার গবেষণালব্ধ রচনাবলি পড়ে খোদ মাওলানা সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভি রহ. আন্তরিক প্রীতি জানিয়েছেন।
তাবলীগের চলমান সংকটের বিষয়ে লেখনীর মাধ্যমে উম্মতের সামনে খোলাসা করার ব্যাপারে হযরত যায়দ মাযাহেরি সাহেব (দা.বা.) বেশ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে আসছেন। মাওলানা সা'দ সাহেব সম্পর্কে তিনি এ পর্যন্ত যতগুলো প্রবন্ধ-নিবন্ধ-পুস্তিকা ও বই রচনা করেছেন, সেগুলোর প্রতিটিকেই তিনি উলামায়ে কেরামের খেদমতে প্রেরণ করেছেন। তাঁদের সম্মতিতেই তিনি সেগুলোকে মুদ্রিত আকারে জনগণের সামনে উপস্থাপন করছেন।
বাংলাদেশেও উনার লেখনীসমূহ বাংলায় অনুবাদ করে স্বতন্ত্রভাবে এ পর্যন্ত প্রায় ৯টি কিতাবে প্রকাশ করা হয়েছে। উলামাদের তত্ত্বাবধানে কিতাবগুলো বিভিন্ন ওয়াজাহাতি জোড়ে উম্মতের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশে আমরা মাওলানা সা'দ সাহেব সংক্রান্ত বিষয়ে খুটিনাটি জেনেছি উনারই লেখা কিতাবগুলোর মাধ্যমে।
তবে, কোন এক রহস্যজনক কারণে মাওলানা যায়দ মাযাহেরি সাহেবের একটি ফতোয়াকে বাংলাদেশের কেউ কেউ এড়িয়ে যান, যেখানে তিনি মসজিদ থেকে জামাতকে বের করে দেয়াকে 'কবীরা গুনাহ' হিসেবে অভিহিত করেছেন; যা 'তাবলীগ সিরিজ'-এর ১৫নং কিতাবে প্রকাশিত হয়েছে। রাস্ট্র, সময় ও পরিস্থিতি ভিন্নতার অজুহাত দেখিয়ে কেউ কেউ এই ফতোয়াকে বাংলাদেশের জন্য 'অপ্রযোজ্য'(!) বলে আখ্যায়িত করে ফতোয়াটিকে প্রত্যাখান করেন।
অথচ, উনার এই ফতোয়ার বাংলায় অনুবাদকৃত কিতাবটি বাংলাদেশের উলামাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দেশের বিভিন্ন ওয়াজাহাতি জোড়ে বিক্রি করা হয়েছে। এমনকি এই কিতাবটি খোদ কাকরাইলের আহলে শুরা মাওলানা রবিউল হক্ব সাহেবকে 'উৎসর্গ' করা হয়েছে। তার মানে, উনি নিজেও এই কিতাব তথা ফতোয়া সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত।
যেহেতু ফতোয়াটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে, বাংলাদেশের উলামাদের তত্ত্বাবধানে, বাংলাদেশের ওয়াজাহাতি জোড়ে, বাংলাদেশের তাবলীগ মারকাজের আহলে শুরাকে উৎসর্গ করে প্রকাশ করা হয়েছে, তাই এই কথা বলার কোন অবকাশ নেই যে, এই ফতোয়াটি 'মিয়ানমারের জন্য'; বাংলাদেশের জন্য নয়!
এরপরও কেন মাওলানা যায়দ মাযাহেরি সাহেবের এই ফতোয়াকে বাংলাদেশের জন্য 'অপ্রযোজ্য'(!) বলে আখ্যায়িত করে মসজিদ থেকে জামাতকে বের দেয়ার বাহানা তালাশে উৎসাহিত করা হচ্ছে?
#SaveTabligh