১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সেনা-জনতার গৌরবময় অভ্যুত্থানের সুবর্ণ জয়ন্তী আজ
১৯৭২-৭৫ মুজিব শাসনের চরম ফ্যাসিবাদ, আইনহীনতা, হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন, সীমাহীন লুটপাট, এবং ভারতের বর্বর আধিপত্য ও বেপরোয়া লুটপাটের ফলে দেশ যখন ধ্বংসের গভীর গহ্বরে নিপতিত, তখন সিংহপুরুষ কিছু সামরিক কর্মকর্তা ও সাহসী বীর প্রায় পাঁচ শত সেনা, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫এ, রুখে
দাঁড়িয়ে সংঘটিত করেন এক গৌরবদীপ্ত ঐতিহাসিক সেনা-জনতার অভ্যুত্থান। দেশের ব্যাপক জনগণ ও সেনাবাহিনী এ বিপ্লবে সমর্থন জানান। তারা দেশকে তুলে আনেন ধ্বংসের অন্ধকার গহ্বর থেকে। এই দিবসটি ছিল প্রকৃতপক্ষে একটি নাজাত দিবস, ছিল ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাতি ও
জনগণের এক মহান বিজয়ের দিবস, যেমন ছিল ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ এবং ৫ আগস্ট ২০২৪। যে সূর্যসন্তানরা এই মুক্তি আনার বিপ্লবে অংশ নেন তাদেরকে আমরা স্মরণ করি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নিয়ে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের দাবি, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫এর যথাযথ মুল্যায়ন করুন, যারা এই নাজাত
দিবস সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে জাতীয় সম্মাননা প্রদান করুন, তাদের মধ্যে যারা জীবন দিয়েছেন তাদেরকে শহীদের মর্যাদা দিন, এবং তাদের মধ্যে আজও যারা নিপীড়িত রয়েছেন তাদের পাশে দাঁড়ান।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এ মুজিবের মৃত্যুতে যারা ১৫ আগস্টে জাতীয় শোক দিবস পালন করতেন তারা ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের ধারক ও বাহক
মুজিবের পক্ষে দীর্ঘ কাল আওয়ামী-ভারতীয় প্রচারণা, ও ১৫ বছর ধরে তার মূর্তি বানানোর পর, অনেকে বলেন, মুজিব ছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি। কিন্তু বাস্তবে
মুজিব কখনো স্বাধীনতার স্থপতি ছিলেন না। মুজিব কখনো স্বাধীনতা ঘোষণা করেন নি, বা চান নি। ২৫ মার্চ ১৯৭১ রাতে তিনি নিজের ও নিজ পরিবারের নিরাপত্তা এবং পরিবারের জন্য মাসিক ১,৫০০ রুপি (এখনকার কয়েক লক্ষ টাকা) ভাতার ব্যবস্থা করে আত্মসমর্পণ করেন। বিদ্রোহ দমনের পর তাকে
প্রধানমন্ত্রী করা হবে, ইয়াহিয়ার এই আশ্বাসে, তিনি ইয়াহিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা করেন। ২৫ মার্চ রাতে, তিনি ছিলেন ইয়াহিয়ার প্রথম সহযোগী ও জাতীয় বিশ্বাসঘাতক।
জাতীয় বেঈমান মুজিব ১৯৭২-৭৫ এক ফ্যাসিবাদী জালেমশাহী কায়েম করেন। মুজিব আমলে আ'লীগ ও ভারতের কারসাজিতে রক্ষীবাহিনীর হাতে নিহত হয় ৩০ হাজার দেশপ্রেমিক, দেশে চলে বর্বর হত্যা, গুম, নিপীড়ন, দখলবাজি, বেপরোয়া আইনহীনতা ও দুর্নীতি, তারা খাদ্যসামগ্রী সীমান্ত পাচার করে
সৃষ্টি করে মানুষসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ যাতে মৃত্যু হয় ১৫ লক্ষ মানুষের, আর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতীয় বর্বর লুন্ঠন ও আধিপত্যবাদ এবং বাকশালী স্বৈরাচার। দেশের এই চরম বিপর্যয়ে সেনা-জনতার ১৫ আগষ্ট ও ৭ নভেম্বর ১৯৭৫-এর গৌরবময় অভ্যুত্থানে দেশ রক্ষা পায়।