একাত্তরের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবীদের যে বয়ান গুরুত্ব পায়নি
ফিরোজ মাহবুব কামাল
www.drfirozmahboobkamal.com/blog/একাত্তরের-ইতিহাসে-বুদ্ধি/
বাংলাদেশের ইতিহাস চর্চায় পক্ষপাতিত্ব বিশাল। শুধু একটি পক্ষের বক্তব্যকেই বিপুল ভাবে প্রচার দেয়া হয়েছে। সেটি একাত্তরের চেতনাধারীদের বয়ান। কিন্তু তাদের বাইরেও আরেকটি পক্ষ ছিল। কিন্তু তাদের বক্তব্যগুলি পরিকল্পিত ভাবে আস্তাকুড়ে ফেলা হয়েছে। অথচ কি ছিল তাদের বক্তব্য এবং কোন যুক্তিতে তারা পাকিস্তান ভাঙার বিরোধীতা করলো –সে কথাগুলিও তো সবার সামনে আসা উচিত। আদালতে বাদী-বিবাদী –উভয় পক্ষেরই বক্তব্য পেশের সুযোগ দেয়া হয়। নইলে অসম্ভব হয় ন্যায় বিচার। তাই একাত্তর নিয়ে অন্য পক্ষের বক্তব্যও সামনে আসা উচিত। কিন্তু ফ্যাসিবাদী অশুভ শক্তি তাদের শাসনামলে সেরূপ একটি সভ্য বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকেই অসম্ভব করে রেখেছিল। এ ধারণা ঠিক নয় যে, শধু জামায়াত ইসলামী, নিজামে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পাকিস্তান ডিমোক্রাটিক পার্টি, খেলাফতে রাব্বানী পার্টি, কৃষক শ্রমিক পার্টি, জমিয়তে ইসলামের ন্যায় কিছু ইসলামী সংগঠন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। বরং পক্ষ নিয়েছিল বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কবি-সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিককর্মী। নিম্নে তাদের নাম ও তাদের কিছু বয়ান তুলে ধরা হলো।
১৯৭১ সালের ১৭ মে তারিখ দৈনিক পাকিস্তান (পরবর্তীতে দৈনিক বাংলা) একটি বিবৃতি ছাপা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, “পাকিস্তানী শাসন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আমাদের অভাব-অভিযোগ রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের যেটা প্রাপ্য সেটা না পেয়ে আমরা অসুখী। আমাদের এ অসন্তোষ আমরা প্রকাশ করেছি একই রাষ্ট্রের কাঠামোর আওতায় পূর্ব পাকিস্তাঅনের জন্য ব্যাপক স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ভোট দিয়ে। কিন্তু আওয়ামী লীগের চরমপন্থীরা এ সহজ সরল আইন-সঙ্গত দাবীকে একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণার দাবীতে রূপান্তরিত করায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। বাঙালি হিন্দু বিশেষ করে কলকাতার মারোয়াড়ীদের আধিপত্য ও শোষণ এড়ানোর জন্যই আমরা বাংলার মুসলিমেরা প্রথমে ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ রাজত্বকালে আমাদের পৃথক পূর্ব বাংলা প্রদেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নেই এবং ১৯৪৭ সালে ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রদেশের মুসলিম ভাইদের সাথে যুক্ত হওয়ার সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। উক্ত সিদ্ধান্তে অনুতপ্ত হওয়ার আমাদের কোন কারণ নেই। পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু প্রদেশ হিসেবে সারা পাকিস্তানকে শাসন করার অধিকার আমাদের আছে। আর সেটা আমাদের আয়ত্তের মধ্যেই এসে গিয়েছিলো। ঠিক তখনই চরমপন্থীদের দুরাশায় পেয়ে বসলো এবং জাতীয় অস্তিত্বকেই বিপন্ন করে তুললো। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন দিলেন। ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আলোচনা কালে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন্তু উল্টোটাই ঘটে গেলো এবং নেমে এলো জাতীয় দুর্যোগ। কিন্তু আমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে আমরা আশাবাদী হ্ওয়ার সঙ্গত কারণ রয়েছে। আমরা পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত এবং বর্তমান সরকার অবস্থা অনুকূলে হওয়ার সাথে সাথে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু করার ইচ্ছা আবার ঘোষণা করেছেন। এমতবস্থায় বিশ্বের অন্যান্য স্থানের বন্ধু এ্যাকাডিমিশিয়ানরা আমাদের কল্যাণের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করায় আমরা কৃতজ্ঞ। তবে আমরা আমাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোন বড় ধরণের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা ও নিন্দা করছি।”
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে যারা ছিলনে তারা হলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, লেখক নাট্যকার শিক্ষাবিদ প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান এম. কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. মীর ফখরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের রিডার ড. কাজী দীন মোহম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সিনিয়র লেকচারার ও নাট্যকার নূরুল মোমেন, কবি আহসান হাবিব, অভিনেতা-চিত্রপরিচালক-সঙ্গীত পরিচালক খান আতাউর রহমান, গায়িকা শাহনাজ বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ও নাট্যকার আশকার ইবনে শাইখ, গায়িকা ফরিদা ইয়াসমিন, পল্লী গীতির গায়ক আব্দুল আলীম, লেখক-প্রয়োজক-চিত্রপরিচালক আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম, লেখক-প্রয়োজক-চিত্রপরিচালক ও.এ. এইচ. চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের রিডার ড. মোহর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান মুনীর চৌধুরী, বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের ড. আশরাফ সিদ্দিকী, গায়ক খোন্দকার ফারুক আহমদ, গায়ক এম. এ. হাদি, গায়িকার নিনা হামীদ, গায়িকা লায়লা আন্জুমান্দ বানু, শামসুল হুদা চৌধুরী (জিয়া ক্যাবিনেটের মন্ত্রী, পরবর্তীততে এরশাদ সরকারের সংসদ স্পীকার), শিল্পী বেদার উদ্দিন আহমেদ, গায়িকা সাবিনা ইয়াসমীন, গায়িকা ফেরদৌসী রহমান, গায়ক মোস্তাফা জামান আব্বাসী, গল্পকার সরদার জয়েন উদ্দীন, লেখক ও সমালোচক সৈয়দ মুর্তজা আলী, কবি তালিম হোসেন, গল্পকার শাহেদ আলী, মাহে নও সম্পাদক কবি আব্দুস সাত্তার, নাট্যকার ফররুখর শীয়র, কবি ফররুখ আহমদ, পাকিস্তান অবজারবার (পরবর্তীতে বাংলাদেশ অবজারবার) সম্পাদক আব্দুস সালাম, মর্নিং নিউজ সম্পাদক এ.জি. এম. বদরুদ্দীন, দৈনিক পাকিস্তান (পরবর্তীতে দৈনিক বাংলা) সম্পাদক আবুল কালাম সামসুদ্দীন, অভিনেতা ও চিত্র পরিচালক ফতেহ লোহানী, কবি হেমায়েত হোসেন, লেখক আকবর উদ্দীন, লেখক আকবর হোসেন, অধ্যক্ষ এ. কিউ. এম. আদম উদ্দিন, নাট্য শিল্পী আলী মনসুর, লেখক আফসার উদ্দীন আহমদ, লেখক ও সাংবাদিক সানাউল্লাহ নূরী, কবি ও লেখক সামসুল হক, লেখক সরদার ফজলুল করিম, গায়িকা ফাওজিয়া খান প্রমুখ ৫৫ জন নেতৃস্থানীয় শিক্ষাবিদ, কবি, শিল্পী ও বুদ্ধীজীবী।
১৯৭১ সালের ২৭ জুনে দৈনিক পাকিস্তান (পরবর্তীতে দৈনিক বাংলা) আরেকটি বিবৃতি ছাপা হয়। তাতে বলা হয়, “আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনায় গভীর বেদনা বোধ করছি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভারতীয় যুদ্ধবাজ যারা মুসলিমদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি হিসাবে পাকিস্তান সৃষ্টিকে কখনো গ্রহণ করেনি প্রধানত তাদের চক্রান্তের ফলেই এটা হয়েছে। ...আমরা দেশের সংহতি ও অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশংসা করছি। ... আমরা দেশের সংহতি ও অখণ্ডতা বিপন্ন করার জন্য চরমপন্থীদের নিন্দা করছি। বহির্বিশ্বের চোখে পাকিস্তানের মর্যাদা হ্রাস ও পাকিস্তানকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করার অপচেষ্টা এবং অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে আমাদের ঘরোয়া ব্যাপারে ভারতীয় হস্তক্ষেপের আমরা নিন্দা করছি...”। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর এবং আইন বিভাগের ডীন ইউ. এন. সিদ্দিকী, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রধান ও সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুল করিম, সমাজ বিজ্ঞানের ডীন ড. এম. বদরুদ্দোজা, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের লেকচারার মোহম্মদ ইনামুল হক, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের রিডার মোহম্মদ আনিসুজ্জামান, ইংরাজী বিভাগের সিনিয়র লেকচারার খোন্দকার রেজাউর রহমান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের লেকচারার সৈয়দ কামাল মোস্তাফা ও এম. এ. জিন্নাহ, ইতিহাসের সিনিয়র লেকচারার রফিউদ্দীন, রসায়ন বিভাগের প্রধান এ.কে. এম. আহমদ, সমাজ বিজ্ঞানের সিনিয়র লেকচারার রুহুল আমীন, বাণিজ্য বিভাগের প্রধান মোহম্মদ আলী ইমদাদ খান, ইতিহাসের সিনিয়র লেকচারার হোসেন মোহম্মদ ফজলে দাইয়েন, বাংলা বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মোহম্মদ দিলওয়ার হোসেন, সংখ্যাতত্ত্বের সিনিয়র লেকচারার আব্দুর রশিদ, ইতিহাস বিভাগের রিডার মুকাদ্দুসুর রহমান, ইতিহাসের লেকচারার আহসানুল কবীর, অর্থনীতি বিভাগের লেকচারার শাহ মুহম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম, ইংরাজী বিভাগের প্রধান মহম্মদ আলী, পদার্থ বিদ্যা বিভাগের রিডার এজাজ আহমদ, গণিতের লেকচারার এস. এম.হোসেন, গণিত বিভাগের রিডার জেড. এইচ. চৌধুরী, সংখ্যাতত্ত্বের লেকচারার হাতেম আলী হাওলাদার, বাংলা বিভাগের রিডার ড. মোহম্মদ আব্দুল আওয়াল, বাংলা বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান হায়াত (লেখক হায়াত মাহমুদ), ইতিহাসের গবেষণা সহকারী আব্দুস সায়ীদ, অর্থনীতি বিভাগের লেকচারার মোহাম্মদ মোস্তাফা, ইতিহাসের লেকচারার সুলতানা নিজাম, ইতিহাসের রিডার ড. জাকিউদ্দীন আহমদ এবং ফাইন আর্টসের লেকচারার আব্দুর রশীদ হায়দার।
পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তান অবজারভার (পরবর্তীতে বাংলাদেশ অবজারভার) পত্রিকার মালিক প্রখ্যাত আইনবিদ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, “ভারতীয় প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করা এবং তার দ্বারা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে এদেশের অস্তিত্বকে বিলোপ করে নিজস্ব সম্প্রসারণবাদী মনোভাবকে চরিতার্থ করা।” (সূত্র: একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ পৃষ্টা ৪৮, বিবৃতিটি ৬ এপ্রিল ১৯৭১’য়ে দেয়া হয়।) জিয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান বলেন, “প্রসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রবল উৎকন্ঠার সাথে রাজনৈতিক দলসমুহকে অধিকতর স্বাধীনতা প্রদান পূর্বক দেশে পূর্ণ ও বাধাহীন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল এ সুযোগের ভূল অর্থ করে বলপ্রয়োগের ....মাধ্যমে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে জয়লাভ করে নিজেদের খেয়াল খুশীতে দেশ শাসন করার দাবী করে এবং এভাবেই অহমিকা, অধৈর্য ও ঔদ্ধত্যের ফলে নিজেদের ভাসিয়ে দেয়।....আমি সাম্রাজ্যবাদী ভারতের দুরভিসন্ধি নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য জনগণের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।” (সূত্র: একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়’ পৃষ্টা ৯১, বিবৃতিটি ৪ মে ১৯৭১’য়ে ছাপা হয়)। পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পাকিস্তান ডিমোক্রাটিক পার্টির প্রধান জনাব নূরুল আমীন বলেন, “পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য আমরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও হিন্দু আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি এবং সে সংগ্রামে আমরা জয়ী হয়েছি। ....আজও পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য আমাদের বিরুদ্ধশক্তির মুকাবিলা করতে হবে। -(দৈনিক সংগ্রাম, ৮ এপ্রিল, ১৯৭১)। মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, “জাতি তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে।...পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা ৯৬ জন পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। ...পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করে যাব। কারণ যদি পাকিস্তানই না থাকে, তবে অধিকারের জন্য সংগ্রামের অবকাশ কোথায়?” –(দৈনিক পাকিস্তান, ১৮ জুলাই, ১৯৭১)।
পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম ৮ এপ্রিল ১৯৭১’য়ে এক বিবৃতি বলেন, “পূর্ব পাকিস্তানীরা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী ভারতকে ছিনিমিনি খেলতে দিবে না। ... পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের শত্রুদের কাছে সহানুভূতি কামনা করে না। জনগণ তাদের অধিকার চায় এবং কিভাবে তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে সেটা হলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ... অসৎ লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রতিটি পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণের ব্যাপারে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের দুরভিসন্ধি বর্তমানে ফাঁস হয়ে গেছে। ... ভারতীয়রা কি মনে করেছে যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের এতোদূর অধঃপতন হয়েছে, তারা ভারতকে তাঁদের বন্ধু ভাববে?” –(দৈনিক সংগ্রাম, ৮ এপ্রিল, ১৯৭১)।