ঈমানদারের যুদ্ধ কেন বিরামহীন?

3 views
Skip to first unread message

Firoz Kamal

unread,
Aug 22, 2025, 7:03:14 AMAug 22
to

ঈমানদারের যুদ্ধ কেন বিরামহীন?

ফিরোজ মাহবুব কামাল

www.drfirozmahboobkamal.com/blog/ঈমানদারের-যুদ্ধ-কেন-বিরা/

 

 

জিহাদের বিলুপ্তি ও মুনাফিকদের দৌরাত্ম্য

 

মুসলিমের বিরুদ্ধে শয়তান ও তার অনুসারীদের ষড়যন্ত্র ও যুদ্ধ যখন প্রতিক্ষণ, তখন স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচতে হলে মুসলিমদেরও প্রতিক্ষণ প্রতিরোধের যুদ্ধ নিয়ে বাঁচতে হয়। যুদ্ধময় এ পৃথিবীতে যুদ্ধ পরিত্যাগ করলে পরাধীনতা নিয়ে বাঁচতে হয়। মুসলিমের এ যুদ্ধকে জিহাদ বলা হয়। বাঙালি মুসলিম জীবনে জিহাদ না থাকায় তাদের ১৯০ বছর বাঁচতে হয়েছে ব্রিটিশের গোলামী নিয়ে। ফ্যাসিস্ট মুজিব ও হাসিনার আমলে দীর্ঘকাল বাঁচতে হয়েছে ভারতের প্রতি আত্মসমর্পিত দাস-দাসীর গোলামী নিয়ে। অথচ জিহাদ নিয়ে বাঁচায় আফগান, ইরানী ও তুর্কি মুসলিমদের জীবনে এমন গোলামী কখনো আসেনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিপ্লবে ভারতের গোলামদের গোলামী থেকে মুক্তি মিললেও আবারো সে গোলামী ফিরে আসতে পারে -যদি বাঙালি মুসলিমগণ জিহাদ নিয়ে বাঁচতে না শেখে।  এরূপ গোলামী থেকে বাঁচাতেই ইসলামের বিধানে নামাজ-রোজায় ক্বাজা আছে, কিন্তু জিহাদে ক্বাজা নাই।

 

শয়তানের ষড়যন্ত্র ও স্ট্রাটেজি সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহতায়ালার চেয়ে আর কে বেশী জানে? এজন্যই তিনি মুসলিমদের উপর শুধু নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাত ফরজ করেননি, ফরজ করেছেন জিহাদও। এছাড়া পূর্ণ ইসলাম পালন ও স্বাধীন ভাবে বাঁচানোর বিকল্প পথ নাই। এজন্যই  নামাজ-রোজা পরিত্যাগ করা যেমন হারাম, তেমনি হারাম হলো জিহাদ পরিত্যাগ করা। জিহাদ হলো ঈমানের দৃশ্যমান রূপ। ঈমান বিলুপ্ত হলে জিহাদও বিলুপ্ত হয়। নবীজীর আমলে আব্দুল্লাহ বিন উবাই এবং তার ৩০০ জন অনুসারী নামাজ-রোজা পরিত্যাগ করার জন্য মুনাফিক হয়নি, তারা মুনাফিকের খেতাব পেয়েছে জিহাদ থেকে দূরে থাকার কারণে।

 

আজ মুসলিম দেশগুলিতে এরূপ মুনাফিকদের সংখ্যাটি অতি বিশাল। এসব মুনাফিকদের কারণে নামাজ-রোজা-হজ্জ পালনে বিপুল সংখ্যক মানুষ দেখা গেলেও আল্লাহ দ্বীনকে বিজয়ী করার জিহাদে লোক নাই। জিহাদকে এরা সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও মৌলবাদ বলে। ফলে মুসলিম দেশগুলিতে বিজয়টি শয়তানের পক্ষের। ফলে ৫০টির বেশী মুসলিম দেশের কোথাও নবীজী (সা:)’র যুগের ইসলাম বেঁচে নাই।  নবীজী (সা:)’র যুগের ইসলাম বেঁচে থাকলে তো বেঁচে থাকতো ইসলামী রাষ্ট্র, মহান আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্ব, তাঁর শরিয়া আইন, দুর্বৃত্ত নির্মূল ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জিহাদ এবং প্যান-ইসলামী মুসলিম ভাতৃত্ব।  সে যুগের আদি ইসলাম বাঁচলে কি মুসলিমগণ ৫০টির বেশী রাষ্ট্রে বিভক্ত মানচিত্র গড়তো? যা বেঁচে আছে তা তো নবীজী (সা:)’র যুগের বিশুদ্ধ ইসলামকে বাদ দিয়ে বাঁচার বেদয়াতী ইসলাম।      

 

                                                            

ঈমানের সংজ্ঞা

 

নামায়-রোজা ও হজ্জ-যাকাত মুনাফিকের জীবনে থাকতে পারে। কিন্তু মুনাফিকগণ কখনোই জিহাদের ময়দানে হাজির হয়নাঅথচ ঈমানের পূর্ণ প্রকাশ ঘটে জিহাদের মধ্যে। তাই জিহাদশূণ্যতার অর্থ ঈমানশূণ্যতা। মহান আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারেরর সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দিয়েছেন সুরা হুজরাতের ১৫ নম্বর আয়াতে। সেটি হলো:

 

إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا۟ وَجَـٰهَدُوا۟ بِأَمْوَٰلِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّـٰدِقُونَ

 

অর্থ: “ঈমানদার একমাত্র তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে, অতঃপর আর কোন রূপ সন্দেহ পোষণ করে না, এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করে তাদের সম্পদ ও জীবন দিয়ে, ঈমানের দাবীতে এই লোকগুলিই হলো সত্যবাদী।”

 

উপরিউক্ত আয়াতের মূল কথা, ঈমানদার হওয়ার জন্য অপরিহার্য শুধু আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান নয়, বরং অপরিহার্য হলো জান ও মাল দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডাকে বিজয়ী করার জিহাদ। জিহাদের হাতিয়ার শুধু অস্ত্র য়, বরং সেটি হলো মু’মিনের কথা, লেখনী ও রাজনীতি। যুগে যুগে বহু মানুষ শহীদ য়েছে জালেম শাসকের বিরুদ্ধে শুধু সত্য কথা বলা বা লেখনীর কারণে। ইসলামের শত্রু পক্ষের হাতে শহীদ হওয়ার জন্য তাদেরকে অস্ত্র হাতে রণাঙ্গনে যুদ্ধে যেতে হয়নি, তারা শহীদ হয়েছেন নিরস্ত্র অবস্থায়যেমন মিশরের ইখওয়ান নেতা হাসানুল বান্না, কুর’আনের বিখ্যাত মোফাচ্ছের শহীদ কুতুব, ইরানী বুদ্ধিজীবী আলী শরিয়তি, ১৯৬৯’য়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামপন্থী ছাত্রনেতা আব্দু্ল মালেকের ন্যায় অসংখ্য ব্যক্তি শহীদ হয়েছেন স্রেফ সত্য কথা বলা ও লেখনীর জন্য। নবীজীর আমলে হয়রত সুমাইয়া (রা:) এবং তাঁর স্বামী ইয়াছির (রা:) কোন রণক্ষেত্রে শহীদ হননি; তারা শহীদ হয়েছিলেন আল্লাহ ও তার রাসূলের পক্ষে মৌখিক সাক্ষ্য দেয়ার কারণে। কাফিরদের কাছে মুমিনের মৌখিক সাক্ষ্যদান হত্যাযোগ্য অপরাধ গণ্য হয়েছে।

 

 

হারাম হলো চিহ্নিত শত্রুদের সাথে সখ্যতা

 

যারা শরিয়ত প্রতিষ্ঠার বিরোধী এবং যারা সেবাদাস ভারতের ন্যায় কাফের শক্তির -বাংলাদেশের মাটিতে তারা প্রকৃত বেঈমান এবং ইসলামের শত্রুপক্ষীয় তাদের সাথে মুসলিমের কোন রূপ মিত্রতা, সখ্যতা ও রাজনৈতিক সহঅবস্থান হতে পারেনা। ইসলামে সেটি হারাম। বড়ই বিস্ময়ের বিষয় হলো, এ নিদারুন সত্য কথাটি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা পায়নি। তাই অনেক ইসলামপন্থী দল এবং আলেম ইসলামের প্রতিষ্ঠাবিরোধী সেক্যুলারিস্টদের সাথে রাজনৈতিক কোয়ালিশন গড়ে। একটি দেশের জন্য গ্লানিকর বিষয়টি ঘুর্ণিঝড়, ভূমিকম্প বা মহামারিতে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণনাশ নয়, রং সেটি হলো ঈমানের মৃত্যু। আর ঈমানের সে মৃত্যু দেখা যায় কোন দুর্বৃত্ত বেঈমানকে শাসক রূপে মেনে নেয়া এবং সেরূপ শাসককে রাজস্ব দিয়ে প্রতিপালন দেয়ামুসলিমদের পতনের শুরু তখন থেকেই যখন এজিদের ন্যায় দুর্বৃত্তরা রাষ্ট্রের প্রধান তথা চালকের আসনে বসার সুযোগ পেয়েছে। যে আসনে মহান নবীজী বসেছেন সে আসনে এরূপ দুর্বৃত্তদের কি সহ্য করা যায়?

 

মুসলিমদের শুধু নামাজী হলে চলে না, তাদেরকে যুগের এজিদ ও ইমাম হোসেনদেরও চিনতে হয় এবং এজিদ পক্ষে খাড়া হওয়া থেকে বাঁচতে হয়। এখানে ভুল হলে স্রেফ কুর’আন তেলাওয়াত, নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাত ও তাসবিহ পাঠ জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে পারে না। নামাজ-রোজা ও হজ্জ-যাকাতের ন্যায় ইবাদতের মূল লক্ষ্য তো মহান আল্লাহতায়ালার এজেন্ডার সাথে একাত্ম করা। এবং যে ব্যক্তি তাঁর এজেন্ডার সাথে একাত্ম হয়, সে কি কখনো শয়তান পক্ষীয় ব্যক্তি ও দলের সাথে একাত্ম হয়? তাই কোন ঈমানদার ব্যক্তি মুজিবের ন্যায় কোন দুর্বৃত্তকে কখনোই জাতির নেতা, পিতা বা বন্ধু বলতে পারেনা। যারা মহান আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর দ্বীনের বন্ধু নয় তারা মুসলিমদের বন্ধু হয় কি করে? অথচ সেটিই হচ্ছে বাংলাদেশের ন্যায় একটি মুসলিম দেশে।

 

পৌত্তলিক কাফের শত্রুকে বন্ধু রূপে গ্রহন করাটি কবিরা গুনাহ। বিপুল সংখ্যক বাঙালি মুসলিম সে গুনাহ করেছে ভারতকে বন্ধু রূপে গ্রহন করে। এমন পাপ আযাব ডেকে আনে। বাংলাদেশীদের উপর সে আযাব এসেছে মুজিব-হাসিনার ন্যায় দুর্বৃত্ত জালেমের স্বৈর শাসন রূপে ভারতের অতি পরিচিত এজেন্ট শাহরিয়ার কবির বলেছিল, ভারতের ঋণ কোনদিন শোধ করা যাবে না। এটি সত্য, যারা ভারতের এজেন্ট তারা ভারতের ঋণ কোন দিন ভুলতে পারবে না এবং শোধ করতে পারবে না। কারণ ভারত তাদের সাহায্য না করলে একাত্তরে তারা কখনোই বিজয় পেত। মুক্তি বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের একটি জেলা বা মহকুম দূরে থাকে একটি থানাও নিজ শক্তিতে স্বাধীন করতে পারিনি। মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগকে বসিয়েছে ৪৫ হাজার পাকিস্তানী সৈন্যের বিরুদ্ধে ২৫০ হাজার ভারতীয় সৈন্য যুদ্ধ করে। তাই ভারতের প্রতি ভারতসেবীদের দায় বিশাল।   

 

কিন্তু যারা ভারতসেবী নয় এবং বাঙালি মুসলিমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী -তাদের কাছে চিত্রটি ভিন্ন।  প্রকৃত সত্য হলো, কখনোই ভুলবার নয় বাংলাদেশীদের  বিরুদ্ধে  ভারতের ষড়যন্ত্র ও নৃশংস অপরাধগুলি এবং এখনো লাগাতর অব্যাহত রয়েছে সে অপরাধের ধারা। মনিব যদি গুম, খুন, চুরি-ডাকাতি এবং ধর্ষণে লিপ্ত হয়, তার পোষা ভৃত্যটি স্বচোখে দেখেও তার নিন্দা করে না, বরং নিজের দাসত্ব ও পেট বাঁচাতে মনিবের প্রশংসায় গদগদ হয়। তেমনি অবস্থা শাহরিয়ার কবিরের ন্যায় ভারতীয় দাসদের।

 

ভারতীয়দের  অপরাধের তালিকাটি বিশাল। ১৯৭১য়ে ভারতের সেনাবাহিনীর হাতে অধিকৃত হওয়ার পর শুরু হয় নৃশংস লুটতরাজ। তখন সীমান্ত বিলুপ্ত করে দেয় বাংলাদেশের খাদ্য ভারতে নিতে। পাচার শুরু হয় বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ সামগ্রীও। সে লুণ্ঠনে কোয়ালিশন গড়ে উঠে ভারতীয় লুটেরাদের সাথে আওয়ামী লীগের দলীয় দুর্বৃত্তদের। তাতে নেমে আসে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। মৃত্য হয় ১৫ লাখের বেশী বাংলাদেশী। ভারত কেড়ে নিচ্ছে পদ্মা, তিস্তাসহ ৫৪টি যৌথ নদীর পানি। একাত্তরের যুদ্ধ শেষে ডাকাতি করে নিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর  হাজার হাজার টাকার অস্ত্র। শাহরিয়ার কবিরের ন্যায় দাসেরা তা নিয়ে তার মনিব দেশ ভারতকে  নিন্দা করতে রাজী নয়।  বরং বাংলাদেশীদের  নসিহত দেয় ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ ও নতজানু থাকতে। শাহরিয়ার কবিরের মত দাসেরাই একাত্তরে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর ইসলামপন্থী ও ভারতবিরোধীদের নির্মূলের লক্ষ্যে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গড়েছিল। এবং তাদের অপরাধী বানাতে ভারতীয় সেবাদাসদের বিচারক বানিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্দানে আদালত বসিয়েছিল।

 

 

মানব অসভ্য হয় ঈমানহীনতার কারণে

 

চুরি-ডাকাতি, গুম-খুন, সন্ত্রাস ও স্বৈরাচার অতি গুরুতর অপরাধ। তবে আরো গুরুতর অপরাধ হলো এসব দুর্বৃত্তদের শাস্তি না দিয়ে নেতা, দেশের শাসক বা জাতির পিতার আসনে বসানো। এ অসভ্য কাজ কোন সভ্য জনগণের হতে পারে না। এটি নিরেট বিবেকহীনতা। মানব অসভ্য হয় অর্থের অভাবে নয়, বরং ঈমানহীনতা ও বিবেকহীনতার কারণে। সে অসভ্যতার প্রকাশ ঘটে দুর্বৃত্তকে সম্মানিত করার মধ্য দিয়ে। অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামের আগুণে নিক্ষিপ্ত হবে চুরি-ডাকাতি, মানুষ খুন বা ধর্ষণের কারণে নয়, বরং তাদেরকে জাহান্নামে নিবে তাদের বিবেকহীন বিশ্বাস, কর্ম ও আচরন। ঈমানহীনতা ও বিবেকহীনতার কারণেই মানুষ মূর্তি, শাপ-শকুন, দেব-দেবী ও লিঙ্গকে যেমন পূজা করে তেমনি দুর্বৃত্ত জালেমদের দলের নেতা, জাতির পিতা ও দেশের শাসকের আসনে বসায়।  এবং সে ঈমানহীনতা ও বিবেকহীনতাই বাংলাদেশীদের মাঝে বেশী বেশী হচ্ছে। ফলে দেশটি ইতিহাস গড়ছে গুম, হত্যা, ধর্ষণ ও স্বৈরাচারের ন্যায় নানা রূপ অপরাধে।

অথচ আল্লাহর খলিফা রূপে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের উপর দায়িত্ব ছিল সকল প্রকার অন্যায়-অবিচারের নির্মূল এবং ন্যায় ও সুবিচারের প্রতিষ্ঠা। দেশবাসী যে এক্ষেত্রে ব্যর্থ -তা কি প্রমাণের অপেক্ষা রাখে? এ বিশাল ব্যর্থতা নিয়ে পরকালে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে কি কোন পুরস্কার মিলবে? দেশে কতগুলি কারখানা, প্রাসাদ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিজ বা রাস্তা নির্মিত হলো, মাথাপিছু আয় বা বিদেশে রফতানি কতটা বৃদ্ধি পেল -মহান আল্লাহ তায়ালা সে হিসাব চাইবেন না। বরং হিসাব চাওয়া হবে, কত জন অসভ্য মানুষ সভ্য হলো, কত জন বেঈমান ঈমানদার হলো এবং দেশে কতটা সুবিচার প্রতিষ্ঠা পেল -সেগুলি। প্রশ্ন হলো, মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে হিসাব দেয়ার আগে বাঙালি মুসলিমগণ কতটা নিচ্ছে নিজেদের সে ব্যর্থতার হিসাব? এ ব্যর্থতা যে তাদের জাহান্নামে নিবে -সে হুশই বা কজনের?

 

অপরাধ যেখানে নিষ্ক্রিয়তা ও খেয়ানত

গৃহে আগুন লাগলে নিষ্ক্রিয় থাকা অপরাধ,তেমনি অপরাধ হলো দেশ দুর্বৃত্ত শক্তির হাতে অধিকৃত হলে নিষ্ক্রিয় থাকা। গৃহের আগুন, ভূমিকম্প, বা সুনামী কাউকে জাহান্নামে নেয় না। কিন্তু রাষ্ট্র বেঈমান জালেমদের হাতে অধিকৃত হলে সে রাষ্ট্র জাহান্নামে নেয়ার বাহনে পরিণত হয়। ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে জনগণের বিরুদ্ধে এ জালেম দুর্বৃত্তদের ষড়যন্ত্রর ও যুদ্ধ তো প্রতিক্ষণ। সেরূপ প্রেক্ষিতে মুসলিমগণ নীরব ও নিষ্ক্রিয় হয় কি করে? নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে কেউ কি জান্নাতে যোগ্য হতে পারে?

কিছু বিকলাঙ্গ ছাড়া প্রতিটি মানবকে মহান আল্লাহ বিস্ময়কর বুদ্ধিবৃত্তিক সামর্থ্য দিয়েছেন। সে সামর্থ্যের বলে সে ফেরেশতাদের চেয়েও শ্রেষ্ঠতর হতে পারে। অপরাধ হলো নিজের সে বিস্ময়কর সামর্থ্যকে আবিষ্কার না করা এবং আল্লাহ তায়ালার এজেন্ডাকে বিজয়ী কাজে বিনিয়োগ না করা। মানব জীবনের এটি হলো সবচেয়ে বড় খেয়ানত। আর আমানতের এরূপ খেয়ানত করা হলো মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামে যাবে খুন, চুরি-ডাকাতি বা ধর্ষণের কারণে নয়, বরং এই বিশাল আমানতের খেয়ানতের কারণ। বর্তমান বিশ্বে নিজেদের মুসলিম রূপে দাবী করে ১৫০ কোটির বেশী মানুষ। কিন্তু তাদের খেয়ানতের অংকটি বিশাল। এই খেয়ানতকারীদের কারণেই মহান আল্লাহর দ্বীন পৃথিবী পৃষ্ঠে আজ পরাজিত এবং বিজয় পেয়েছে শয়তানের এজেন্ডা। তাদের মধ্যে যদি ঈমান থাকতো তবে আল্লাহ তায়ালার দ্বীনকে বিজয়ী করার তাড়না দেখা যেত।  

Reply all
Reply to author
Forward
0 new messages