সরি, একটা ভুল আছে "অমোঘ হয়"-এর জায়গায় "অমোঘ নয়" হবে, শেষের আগের প্যারার শেষ লাইনে।
From: kobit...@googlegroups.com [kobit...@googlegroups.com] On Behalf Of Gomes, Subrata Augustine
Sent: Friday, 8 May 2009 4:30 PM
To: kobit...@googlegroups.com
Subject: [কবিতাকথা:649] Re: [????????:632] Re: ? ?? ??? ???????প্রিয় গালিব,সর্বজনীন কথাটা তৈরি হয়েছে এভাবে: সর্ব+জন = সর্বজন+ঈন (প্রত্যয়) = সর্বজনীন। ঈন প্রত্যয় যোগ হলে আদ্যস্বরের বৃদ্ধি বা গুণ হয় না। যেমন জন+ঈন জনীন, অভ্যন্তর+ঈন অভ্যন্তরীণ, সর্বাঙ্গ+ঈন সর্বাঙ্গীন, তেমনই সর্বজন+ঈন সর্বজনীন। সর্বজনীনের বিকল্প শব্দ হতে পারে সার্বজন (অণ্ প্রত্যয় যোগে, সেক্ষেত্রে আবার ঈন প্রয়োগ করবার কোনো মানে হয় না), সার্বজন্য বা সার্বজনিক (তেমনই অভ্যন্তরীণ-এর হতে আভ্যন্তর বা আভ্যন্তরিক)।ছন্দ নিয়ে আপনার সাথে আমার গুরুতর মতপার্থক্য আছে তা বুঝতে পারছি। আপনি ছন্দের যে-ফাংশানটার উল্লেখ করছেন, খানিকটা কাব্যিক ভাষায় (মানে, রাধার পায়ের নীচে কাৎটা গেড়ে হাৎটার কথা বলে), সেটা "মিহি কেরানির" কাজ বলে গণ্য করা গেলেও যেতে পারে, সেটা ছন্দের প্রাথমিক ফাংশান এবং একজন নোতুন কবির মাথাব্যথা। কবিতার কথা বাদ দিই, সকল শিল্পের হবু শিল্পী্কেই শিল্পী হবার আগে পর্যন্ত বেধড়ক রেওয়াজ করতে হয় ঐ ঐ শিল্পের টুল-গুলিকে আয়ত্ত করতে। ঠিক ঐ মুহূর্তে সেগুলি টুলজ-মাত্র। কিন্তু, ঐ শিক্ষানবিস স্নাতক হয়ে যাবার পরে টুলগুলি তার শিল্পসাধনার প্রতিবন্ধক নয়, বরং উপায় হয়ে দাৎড়ায় (ঘোড়ার ডিম চন্দ্রবিন্দু আসে না কেন)। ছন্দ নিজেই আত্মপ্রকাশের উপায় হয়ে যায়, আত্মপ্রকাশের বাধা নয়। রাধার পায়ের নীচের কাদা বা কাৎটা নয়, হয় কৃষ্ণের বাৎশির সুর যা আৎধার রাতে তাকে দিঙ্-নির্দেশনা দেয় তার দয়িত, তার মোক্ষ, তার অমৃতের দিকে তাকে নিয়ে যেতে।এ-পর্যন্ত পৃথিবীর প্রায় সকল শ্রেষ্ঠ কবিতা ছন্দে লেখা হয়েছে। এর কয়টার বিষয়ে বলা যাবে যে ছন্দ না থাকলে সেগুলো আরও ভালো কবিতা হতে পারত? "পর্বত চাহিল হতে বৈশাখের নিরুদ্দেশ মেঘ / তরুশ্রেণী চাহে পাখা মেলি / মাটির বন্ধন ফেলি / ঐ শব্দরেখা ধরে চকিতে হইতে দিশাহারা / আকাশের খুৎজিতে কিনারা"... আপনি কোন্ প্রাণে একটা শব্দ, একটা অক্ষরও এর বদলাতে পারেন? একটা অক্ষরকে বলতে পারেন যে ছন্দোরক্ষার স্বার্থে এই অক্ষরটা ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু এটি অমোঘ হয় এই কবিতায়?তাইলে খাড়াইল কী (ইতি ভানু)? ছন্দ নয়, বরং ছন্দ প্রয়োগকারীর ইনকম্পিটেন্স (শুধু ছন্দ প্রয়োগে নয়, সার্বিকভাবে কবি হিসাবেও) অন্তরায় হয়ে দাৎড়ায় কবিতার উত্কর্ষের।এ আমার মনে হয়।সুব্রত।
From: kobit...@googlegroups.com [kobit...@googlegroups.com] On Behalf Of Sohel Hasan Galib [kranti...@gmail.com]
Sent: Friday, 8 May 2009 1:16 PM
To: kobit...@googlegroups.com
Subject: [কবিতাকথা:648] Re: [????????:632] Re: ? ?? ??? ???????প্রিয় সুব্রতাদা,
আপনাকে অশেষ শুকরিয়া জানাই, কষ্ট স্বীকার করে ভূমিকাটি আবার পড়েছেন বলে। আর প্রশংসা করেছেন বলে কৃতজ্ঞতা নাইবা জানালাম, সেটা সংকীর্ণতা হবে।
হায় বেলুড় মঠ!
কথাটা যখন আমি লিখি তার কিছুদিন আগে ডিডি বাংলায় একটা শাস্ত্রীয় সংগীতের অনুষ্ঠান দেখেছিলাম। বেলুড় মঠ থেকে সম্প্রচারিত হচ্ছিলো। রবি শঙ্কর সেতার বাজাচ্ছিলেন। তার কন্যা আনুষ্কাও ছিলেন সম্ভবত। এর আগে আমি নিজেও বেলুড় মঠ ঘুরে এসেছি। কিন্তু কোনোদিন বানানটার দিকে তাকিয়ে দেখি নি। আপনাকে ধন্যবাদ এটি ধরিয়ে দেবার জন্য।
সর্বজননীন ও সার্বজনীন নিয়ে গণ্ডগোলে পড়ি ক্লাস নাইনে। তখন টেক্সটবুক কারিকুলামে বানান-সাযুজ্য ও -সংশোধনের কাজ করছিলেন আমার বাবা। আমি তার দ্বারস্থ হলাম। তিনি যে ব্যাখ্যাটি দিয়েছিলেন :
সর্বজনীন=সকলের জন্য অনুষ্ঠিত / সকলের দ্বারা অনুষ্ঠিত
সার্বজনীন=সকলের দ্বারা অনুষ্ঠিত / সকলের জন্য অনুষ্ঠিত
আমি ঠিক নিশ্চিত নই কোনটার ক্ষেত্রে কী বলেছিলেন। উনি আজ বেঁচেও নেই যে জিজ্ঞেস করবো। কিন্তু অভিধানে এমন সুস্পষ্ট বিভাজন সেদিনও খুঁজে পাই নি, আজও পাই না।
পশ্চিম বাংলার ভাষ্য (সাহিত্য সংসদ্) :
সর্বজনীন=সকলের পক্ষে হিতকর, সকলের জন্য কৃত অনুষ্ঠিত বা উদ্দিষ্ট; বারোয়ারি (সর্বজনীন পূজা, সর্বজনীন প্রচেষ্টা)
সার্বজনীন=সকলের যোগ্য, সর্বজনের জন্য অনুষ্ঠিত; সর্ববিদিত (সার্বজনীন উৎসব)
বাংলাদেশের ভাষ্য (বাংলা একাডেমী) :
সর্বজনীন=সকলের মঙ্গলজনক বা কল্যাণকর; সর্বসাধারণের জন্য অনুষ্ঠিত, বারোয়ারি
সার্বজনীন=সকলের মধ্যে প্রবীণ; সর্বশ্রেষ্ঠ; [অশুদ্ধার্থ : সর্বসাধারণের জন্য অনুষ্ঠিত বা কৃত (সার্বজনীন দুর্গোৎসব)]
সকলের মঙ্গলজনক বা কল্যাণকর---বাংলা একাডেমী এটা কী লিখল! কাছে / জন্য জাতীয় অনুসর্গটি কই?
তাহলে দেখা যাচ্ছে, সার্বজনীন শব্দটি ভুল নয়, অর্থ নিয়ে দ্বিমত আছে। বাংলা একাডেমীর অর্থটাকে আজগুবি এবং উদ্ভট মনে হয়েছে।
আমার বাক্যে ছিলো : 'আধুনিকতাবাদের সার্বজনীনতা নামক ভণ্ডামি'---এখানে ভুলটা শনাক্ত করতে পারছি না, সুব্রতদা। ব্যুৎপত্তিগতভাবে, সার্ব মানে সর্ব-সম্পর্কিত বা সর্বপ্লাবী এবং জনীনকে জন-সংক্রান্ত বা জন-উদ্দিষ্ট ধরে নিলে যা দাঁড়ায় তা হলো : সর্বক্ষেত্রের জনগণের জন্য প্রযোজ্য। আর সর্বজনীন বললে সর্বজনের জন্য প্রযোজ্য বোঝায়। এস্থলে সর্বক্ষেত্রের সর্বজন কথাটার বিস্তৃতি লক্ষণীয়। তারপরও এ ভুল সম্পর্কে আপনার কাছে একটা ব্যাখ্যা দাবি করতে পারি। সকলের জন্য হিতকর হবে।
না, ছন্দকে খাঁচা-টাচা কিছু ভাবি না আমি। বন্ধন বটে, সেটা মুক্তির জন্যই। সেতারের তারটাকে ঠিকমতো বেঁধে না নিলে গান তো বেসুরো হবেই। কথাটা রবির কাছে থেকে ধার করে বললাম। কিন্তু বিদ্যাসাগরের শকুন্তলা বা সীতার বনবাস-এর গদ্যস্পন্দও আমি বুঝতে আগ্রহী। একথাটা বোধ হয় স্পষ্টভাবে বলতে পারি নি।
আমি লিখেছিলাম :
কে না জানে, যুদ্ধক্ষেত্রটা স্বভাবতই বিশৃঙ্খল। কিন্তু সামরিক কুচকাওয়াজ সুশৃঙ্খল। তেমনি ছন্দ-পরিক্রমা পুরোটাই গাণিতিক আর কবিতা রচনা রীতিমতো গণিতঘাতী, এমনকি বিজ্ঞানবিরোধী এক প্রজ্ঞার অভিযান।
এবার একটু ব্যাখ্যা করি। আজ ২৫ শে বৈশাখ। রবীন্দ্রনাথ থেকেই ধার করি। লিখেছেন : অধরা মাধুরী ধরেছি ছন্দোবন্ধনে। কথাটা উল্টে বলা যায়, ছন্দে যা ধরা হয়েছে সেটা আশলে অধরা। সে অধরা কোনো বন্ধন স্বীকার করে না। আর আমরা বন্ধনের বাইরে কোনো কিছু ভাবতেই পারি না---না কোনো সম্পর্ক, না কোনো শত্রুতা। কিন্তু বন্ধনের ফাঁস থেকে আমরাও মুক্তি চাই। তার প্রমাণ, বন্ধনের ভেতর মুক্তিকে চাই।
কবিতা আশলে ছন্দের বাইরের জিনিশ---এভাবে বলা বিপজ্জনক যদিও। তবুও, মিটার বা মাত্রা গণনার মতো মিহি কেরানির কাজটুকু কবির নয়, কর্মীর। তারপরও, 'দুয়ারে কণ্টক গাড়ি' রাধা-শীলনকে মান্য না করে উপায়ও নেই কৃষ্ণের কাছে পৌঁছতে হলে। ছন্দকে আমার অভিসারের পথে রাধার পায়ের নিচে কাঁটার মতো মনে হয় কখনোবা।
কবিতাকে গণিতঘাতী বলেছিলাম, হিশাবকে নিকাশ করার জন্যই। বিজ্ঞানবিরোধী কথাটাও এসেছে ঐ জায়গা থেকে। যুক্তি ও প্রমাণের আঁচ থেকে বাঁচাবার জন্য। বলেছি প্রজ্ঞার কথা, আরো ভালো হতো সজ্ঞা বলতে পারলে। এ কথা সত্যি, সমস্ত বৈজ্ঞানিকতার পেছনে মানুষের কল্পনাকে গুরুত্ব দিয়েছেন আইনস্টাইন। জীবনানন্দ দাশ যেমন কল্পনার সারবত্তার কথা বলেন। কিন্তু এ কি আপনি অস্বীকার করবেন, বিজ্ঞান যাত্রা করে নিশ্চয়তার দিকে অনিশ্চিতি থেকে। কবিতা নিশ্চয়তার বহুমুখ উন্মোচন করে। যা ছিলো সুনিশ্চিত, তাই হয়ে পড়ে প্রশ্নবিদ্ধ, আচ্ছা আর সাচ্চার বাইরে প্রায় অপলাপের মতো। অপহ্নব তো কেবল কবিতাতেই সম্ভব। মানুষের আত্মহত্যাকে যেভাবে যুক্তিগ্রাহ্য করে তুলতে চায় সমাজ, সেখানে 'আট বছর আগের একদিন' একটা অনিশ্চয়তা, এক বিপন্ন বিস্ময় নিয়ে হাজির হয় না কি?
আজ প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে শিরীষ গাছের তলায় বসে পুরনো এই কথাগুলো আরেকবার ভাবলাম।
ইতি
গালিব
2009/5/7 Gomes, Subrata Augustine <AG21...@ncr.com>
Priyo Galib,Shunyer Kabita-r bhoomikaTi tokhon-i poRechhilam, tobe taRahuRa kore, ajke abar poRlam, mon diye...Apnar godyo besh mojbut, ar shahityik-o. Ami godyo-shiddhi-ke je kono dhoroNer lekhar ekTa prak-shorto mone kori. Pranjol godyo je likhte pare na, she kichhui likhte pare na ashole...Apni ja bolechhen, tar onek onek jaygay ami pray shorob tarif kore uThechhi (mane bus-e boshe, bhodrota bojay rekhe jeTuku shombhob)...Poshchimer khoNDoyon-reeti amader kobitar ba shilper bodhke porjonto kemon unmool, udbastu kore tulechhe, ta apnar moto amio shobshomoyi bodh kore eshechhi - amra "amader" kotha likhchhi ki adou? Naki sref poshchimer onukar kore jachchhi?Chhondo niye kothao bhalo laglo, ebong moTei upor shohomot holam. Kintu: "chhondo-porikroma puroTai gaNitik ar kobita rochona reetimoto goNitghati, emonki bigYanbirodhi ek progYar obhijan", ei ray-Tike ami nite parlam na.GoNit bolte jodi kebol paTeegoNit bojhe keu, ba bigYan bolte "shoorjo purbo dik-e oThe" emon shiddhantoke, tahole tar pokkhei emon shoroleekoroNe pou(n)chhe jawa shombhob je chhondo mane sringkhola / shringkhol, chhondo bhaShar, prokasher, chhoTo chhoTo kha(n)cha ba khop-matro... atmoprokasher pothe bighno-matro...Kintu adote, goNit jemon shudhu paTeegoNit noy, tar modhye differential calculus-o achhe, bigYan-o temni kebol nishchiti niye deal kore na, korle Einstein-ke boigYanik bola jay na... temnii, chhondo-o bhaShar jailkhana noy, borong tar muktir shopan... ebong apni nijeo kintu ei bakyoTir agei hore-dore eki rokomer kotha bolechhilen... mane ekTa jatir kotha bolar bhongi ba emonki shwash-proshwasher dhoroNer uporei shei jatir prodhan chhondoguli bhor kore thake...duTo bhul banan dekhlam: sarbojoneen (hobe sorbojoneen), ar Belur (hobe, shombhoboto BeluR, mane D-e shunyo R). Kobider uporodhe bhul bananer Dhe(n)ki gelaTao mono:puto hoy ni.Bhalo thakben,Subrata
Sent: Tuesday, 5 May 2009 1:22 PM
To: kobit...@googlegroups.com
Subject: [????????:632] Re: ? ?? ??? ???????প্রিয় সুব্রতদা,আমার সম্পাদিত "শূন্যের কবিতা" বইটি আমি আপনাকে পাঠাই নি। টুকু পাঠিয়েছে সম্ভবত। আচ্ছা আপনি ভূমিকাংশটা কি পেয়েছেন? যা হোক, যেহেতু আপনার আগ্রহ জন্মেছে, শূন্যের উপর পড়েছে শুভদৃষ্টি (শ্যেনদৃষ্টি!), সেহেতু আমি অনুরোধ করি অন্তত আরও দুটি বই পড়ে নিতে। অনন্ত সুজন সম্পাদিত "শূন্যের সাম্পান" (এখানে অবশ্য প্রাগুক্ত সংকলনের সকল কবির অংশীদারত্ব নেই) এবং মামুন খান ও যুবা রহমান সম্পাদিত "শূন্যদশকের প্রেমের কবিতা"। শেষোক্ত বইটি আপনার ঝালিয়া যেখান থেকে বেরিয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের কবিতা যেখান থেকে বেরোবার কথা, সেখানে আছে। সোহেলকে বললে ও আপনাকে সফট কপি পাঠাতে পারবে।এ দশকের কবিদের খারিজ বা তারিফ করতে গিয়ে তাদের বই না পড়লেও (!) নিদেনপক্ষে এ তিনটি সংকলন পড়ে নেয়া জরুরি।
আমাকে হাল্কাপাৎলা অনুরোধ করলে আমিও পাঠাতে পারি।
ইতি
গালিব
2009/5/5 মুজিব মেহদী <m.m...@gmail.com>প্রিয় সুব্রতদা,শুনে ভালো লাগছে যে, আপনি 'শূন্যের কবিতা' পড়ে উঠছেন। ভালোমন্দ মিলিয়ে যে
অনুভূতিটা হচ্ছে সেটা যদি সত্যি কখনো লিখেন (যেটার সম্ভাবনার কথা আপনি
জানালেনও), তো সেটা খুব খুশিরই কারণ হবে। ডিটেলে যদি লেখাটা হয় তো ধারণা
করি সেটা অনেক বড়ো হবে, যা হয়ত সফট ফর্মে পাঠের জন্য সুবিধাজনক হবে না।
কিন্তু ওর একটা সংক্ষিপ্ত ভার্সন যদি অন্তত কবিতাকথায়ও পোস্ট দিতেন তো এ
ফোরামের পাঠকদের মধ্যে শূন্যের কবিতা বিষয়ে যে কৌতূহলটা জন্ম নিয়েছে,
সেটার একটা মোচন এবং একইসঙ্গে বিস্তারণ সম্ভব হতো।
আলোচনা জমে উঠেছে। ফন্ট ছোট হওয়ায় ভালোমতো পড়তে পারছিলাম না। যাঁরা পোস্ট করেন বাংলায়, দয়া করে সেন্ড করার আগে ফন্ট সাইজ কমপক্ষে ১৪ করে দিন।
আগ্রহীদের জন্য পুরো আলোচনাটি কপি পেস্ট করে ফন্ট সাইজ ১৪ করে দিলাম। আমার মতো যাঁরা শুধু ই-মেইলে পড়ে থাকেন, তাঁদের উপকারে আসবে মনে হয়।
নিচের কবিতাংশের ছন্দপ্রকরণ/বিশ্লেষণ জানতে আগ্রহী। কেউ জানালে বাধিত হবো, বিশেষ করে সুব্রত বা গালিব ভাই।
ধন্যবাদান্তে-
খলিল মাহ্মুদ
মুখের উপরে হায় আমার মনের দরজা বন্ধ করল ওরা
কার্ফিউ কায়েম করল, ব্যারিকেডে রাস্তা ভরল ওরা আমার হৃদয় বদ্লে গেল সরু একটা গলিতে বদ্লে গেল পাঁজর পাথরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে ________________________________________________________________________
From: Gomes, Subrata Augustine <AG21...@ncr.com> Subject: [কবিতাকথা:684] Re: [????????:651] Re: [????????:632] Re: ? ?? ??? ??????? To: "kobit...@googlegroups.com" <kobit...@googlegroups.com> Date: Friday, 15 May, 2009, 9:14 PM |
প্রিয় সুব্রতদা এবং গালিব ভাই,
যেখানে প্রায় ৯৯% মতৈক্য আছে, সেটা নিয়ে সমস্যা নেই, কিন্তু সূক্ষ্মতর পর্যালোচনায় গেলে অবশিষ্ট ১% অমিলেই আলোচনা দীর্ঘতর হয় মনে হয়। গালিব ভাই ও সুব্রতদার পর্ববিন্যাস দেখলাম (প্রদত্ত কবিতাংশ এখান থেকে নেয়া)। ছন্দ সমীক্ষণ অতীতের মতো এখনো জটিল জিনিস, যাতে অতীতের মতো অধুনার ছান্দসিকগণও অনেক ক্ষেত্রে একমত নন (যদিও ওসব বিশ্লেষণ মেনে কবিতা প্রণয়নের
দিন বোধ হয় আর নেই)।
একজন শিক্ষানবিশ হিসেবেই বিনয়ের সাথে বলতে চাই সুব্রতদা ও গালিব ভাইয়ের সাথে পর্ববিন্যাসে আমি পুরোপুরি একমত নই। সুব্রতদা ও গালিব ভাইয়ের ১ম দুই পঙ্ক্তির বিন্যাস নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই, কিন্তু ৩য়-৫ম পঙ্ক্তির পর্ববিন্যাস আপনারা দুজনে যেভাবে দেখিয়েছেন, ওরকম না হয়ে অন্য রকমও হতে পারে বলে মনে হয়।
ছন্দের ব্যাপারটা ঠিক করে দেয় কান, যা নির্ভর করে অর্থবহ বিরতিতে পাঠের উপর। আমি অনেকবার পড়েছি এ অংশটুকু। পড়তে পড়তে মনে হয়েছে- কোনো এক ভদ্রজন প্রতি সেকেন্ডে ৩ কদম হারে হাঁটছিলেন। এভাবে কিছুদূর যাওয়ার পর, (অর্থাৎ প্রথম ২ লাইন পড়ার পর) হোঁচট খেয়ে তাল সামলাতে না পেরে একটু দ্রুত হারে (ধরা যাক প্রতি সেকেন্ডে ৪ কদম) হাঁটলেন, (আমার হৃদয় / বদ্লে গেল = ৪ + ৪ স্বরবৃত্ত), অতঃপর তাল
সামলে পুনরায় হাঁটতে লাগলেন : / সরু একটা গলিতে (যা প্রথম ২ পঙ্ক্তির প্রতিটির প্রথম ২ পর্বের মতো)। তার পরের ২ লাইন হলো সবচেয়ে ইন্টেরেস্টিং। আপনি পড়ুন প্রথম ৩ টি লাইন, বেশ কয়েকবার পড়ুন, ৪ নং লাইনে এসেই আপনি আরও ধীর কদমে হাঁটতে লাগলেন, যেমন কোনো এক শীতের বিকেলে চাদর গায়ে মুড়িয়ে রাস্তার দুপাশ দেখতে দেখতে হাঁটছেন।
বদ্লে গেল পাঁজর পাথরে/
আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে/ এখানে একেকটা লাইনই একেকটা পর্ব, একেবারে মুক্ত। এবার আমার বিন্যাস দেখুন : |
মুখের উপরে হায় / আমার মনের দরজা / বন্ধ করল ওরা কার্ফিউ কায়েম করল, / ব্যারিকেডে রাস্তা ভরল / ওরা |
আমার হৃদয় / বদ্লে গেল / সরু একটা গলিতে
বদ্লে গেল পাঁজর পাথরে/ আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে প্রিয় গালিব ভাই, আশা করি এবার বুঝতে পেরেছেন "সমস্যাটা কী।" একটা জিনিস আপাত যতো সহজ মনে হয়, বিশ্লেষণে ঠিক তদ্রূপ থাকে না। এই দেখুন না, কতো সরল একটা কবিতাংশ বিশ্লেষণ করলাম, কিন্তু আমরা তিনজন পুরোপুরি একমত হতে পারলাম না। ছন্দের জটিলতা এখানেই। পুরাকাল থেকেই, যে কোনো এক ছন্দে রচনা শুরু করে পুরো অবয়বে সেটা মেনে চলা সম্ভব হয় নি। তাই ছন্দ মিক্সড হয়ে গেছে
(মাত্রাক্ষরবৃত্ত, ইত্যাদির কথা বলছি)।
এবার পুরো কবিতাটা দেখুন :
আমি গণহত্যা দেখেছি
আমি গণহত্যা দেখেছি, একখানা
মানচিত্র মেরেছে আমাকে সরল কথার আমি ছানা দেখেছি কাঁকর-খোয়া উড়তে ঝাঁকে-ঝাঁকে দেখেছি নীহারকণা বোমার মতন ঝ’রে পড়তে মুখের উপরে হায় আমার মনের দরজা বন্ধ করল ওরা কার্ফিউ কায়েম করল, ব্যারিকেডে রাস্তা ভরল ওরা আমার হৃদয় বদ্লে গেল সরু একটা গলিতে বদ্লে গেল পাঁজর পাথরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে প্রথম ৫টি লাইন সম্পূর্ণ মুক্তচ্ছন্দে রচিত, তারপর থেকে সেটা আর বজায় থাকে নি। ওটা বজায় না থাকার কারণে যেখানে স্বরঘাটতি পড়েছে সেটা ফিল আপ করে নিই এবার আমার মতো করে। দেখুন :
আমি গণহত্যা দেখেছি
আমি গণহত্যা দেখেছি, একখানা
মানচিত্র মেরেছে আমাকে সরল কথার আমি ছানা দেখেছি কাঁকর-খোয়া উড়তে ঝাঁকে-ঝাঁকে দেখেছি নীহারকণা বোমার মতন ঝ’রে পড়তে মুখের উপরে আমার মনের দরজা বন্ধ করল ওরা কার্ফিউ কায়েম করল, ব্যারিকেডে রাস্তা ভরল আমার হৃদয় বদ্লে গেল একটা গলিতে বদ্লে গেল পাঁজর পাথরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে কী মনে হয়? দুটো এবার পড়ুন পাশাপাশি, নিজের কানের সাথে গভীর সখ্যতা রেখে
আরেকটা কথা সুব্রতদাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, স্বর, মাত্রা, অক্ষর সংখ্যা ঠিক রাখার জন্য এক পর্বের কোনো শব্দকে কি ওভাবে ভাঙা যায়? যেমন : গ- / লিতে, পা- / থরে। এটা মানতে পারলাম না।
ভালো থাকুন সুব্রতদা ও গালিব ভাই।
বিনীত- |
খলিল মাহ্মুদ
|
-------------------------------------------------------------------------------- From: kobit...@googlegroups.com [kobit...@googlegroups.com] On Behalf Of Sohel Hasan Galib [kranti...@gmail.com] Sent: Saturday, 16 May 2009 8:00 AM To: kobit...@googlegroups.com |
Subject: [কবিতাকথা:688] Re: [????????:651] Re: [????????:632] Re: ? ?? ??? ??????? |
খলিল ভাই, আপনার উদ্ধৃত কবিতাংশটি স্পষ্টতই অক্ষরবৃত্তে রচিত। সমস্যা কি? মুখের উপরে হায় / আমার মনের দরজা / বন্ধ করল ওরা
কার্ফিউ কায়েম করল, / ব্যারিকেডে রাস্তা ভরল / ওরা আমার হৃদয় / বদ্লে গেল / সরু একটা গলিতে বদ্লে গেল / পাঁজর পাথরে আর, কার্নেশন ফুটল / থরে-থরে তাহলে চালটা দাঁড়ালো
৮+৮+৬ ৮+৮+২ ৬+৪+৮ ৪+৬ ৮+৪ |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সুব্রতদা,
কষ্ট করে পড়েছেন বলে ধন্যবাদ। তবে আমাদের সময়ের যা অভাব, কোনো কিছু পুরোপুরি মনোযোগ দিয়ে পড়বার সময় আমরা কদাচিৎ পেয়ে থাকি।
আপনার কবিতার আমার ভার্শনটা অবশ্য আপনার কবিতাই। শুধু পড়তে গিয়ে যেখানে স্বর বা মাত্রার হোঁচট খেতে হয়েছে, বা বেখেয়ালে গর্তে পড়ে যাওয়ার মতো হয়েছে, সেখানে শুধু কয়েকটা শব্দ কেটে দিয়েছি ছন্দের গতিশীলতা বোঝানোর জন্য। কাটা শব্দগুলো ব্রাকেটের ভেতর। দেখুন : |
আমি গণহত্যা দেখেছি
আমি গণহত্যা দেখেছি, একখানা মানচিত্র মেরেছে আমাকে সরল কথার আমি ছানা দেখেছি কাঁকর-খোয়া উড়তে ঝাঁকে-ঝাঁকে দেখেছি নীহারকণা বোমার মতন ঝ’রে পড়তে |
(উপরের ৫ লাইন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, সমস্যা নিচে)
মুখের উপরে (হায়) আমার মনের দরজা বন্ধ করল ওরা কার্ফিউ কায়েম করল, ব্যারিকেডে রাস্তা ভরল (ওরা) আমার হৃদয় বদ্লে গেল (সরু) একটা গলিতে |
বদ্লে গেল পাঁজর পাথরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে আর, কার্নেশন ফুটল থরে-থরে |
ওহ্ না, আমি ছন্দযতি'র কথাই বলছিলাম সুব্রতদা, অর্থগতির সাথে 'গুলানো'র ইচ্ছে ছিল না; তবে কী, ছন্দযতিটা অর্থযতি'র উপরেই দাঁড়ায়, এজন্য ব্যাপারাট প্রকৃতপক্ষে গুলানো না, একটার আলোচনায় আরেকটা চলে আসে। এ কবিতাটা কোন্ ছন্দে রচিত? পুরো কবিতাটার পর্ববিশ্লেষণ জানার খুব আগ্রহ এখন।
আর এটাতো খুব খাঁটি কথাই বলেছেন- "ছান্দসিকেরা বরং পরে তাঁদের ছন্দ বিশ্লেষণ করবার চেষ্টা করতেন।" কবি হিসেবে এ কবিতাটা লিখে আপনি ছেড়ে দিলেন, এটা নিয়ে পাঠক হিসেবে বিশ্লেষণ আমরা করতেই পারি, তাই না? করতে গিয়ে চোখে বা কানে যেটুকু ধরা পড়লো তাই বললাম।
মুক্তছন্দ বলতে আমি 'মুক্তক অক্ষরবৃত্ত'র কথা বলিনি। এ টার্মিনোলোজিটা আমি দিইনি, যদ্দূর মনে পড়ে ড. আব্দুল লতিফের কোনো বইয়ে পড়েছি।
একটা উদাহরণ :
সীমান্ত তারের পাশে
আত্মজার ঘ্রাণে বিমুগ্ধ সরলতা সংক্ষুব্ধ মাটির পাত্রে সময়ের ক্লেদ আর বিমর্ষতা একপাশে সরিয়ে রোপণ করছে বিভূতি সন্ধ্যা। রন্ধনশালায় বটির নিচে শুয়ে থাকা সুবোধ
মৎস্য শিকারি জানে না ছলাকলা, তবু তাঁর শিয়রে রাতজাগা মার্বেল প্রেমিকেরা ঘাড় বাঁকিয়ে দেখছে জানালার শিরা-উপশিরা। শবযাত্রীদের পায়ের শব্দে সুনম্র
গোপীদের পায়ের কাছে জমছে – ইশকুল বেলা, মোমালোর শরীরে আমাদের চিহ্ন থাকেনা। দাসত্বের বিনীত মুখমণ্ডল আর অগ্রজ পদচিহ্ন মুছে
রোপিত সন্ধ্যার ধূপধোয়ায় আমি পাখিবধ্ বংশের স্থিরতার সীমা ভেঙে উড়িয়ে দিচ্ছি সৌন্দর্য্যের ডানা। ডানার স্বরমন্ত্রণার সবুজ পৃষ্ঠাগুলি উড়ে উড়ে যায়,
বর্ণগুলো প্রমিত-নাগরিক মুখোশের গায়ে ফুটিয়ে তোলে অসংখ্য কাঁটাগুল্ম, পুকুরপাড়। স্বজাত্যবোধের এই পাড়ের উপর দাঁড়িয়ে
গ্রহণের দরোজা খুলে অপেক্ষা করছি, তোমাকে দেখবো প্রবৃত্তের কাচে। আপনার অনূদিত কবিতায় প্রথম ৫ লাইন এই মুক্তচছন্দে পড়া গেলেও পরের ৫ লাইনে তা হয় না; খেয়াল করে দেখুন।
ফাইনালি সুব্রতদা, বাংলাদেশে এখন রাত প্রায় ২টা, ঘুম ফেলে অযথা মেইল লিখছি, তাও দীর্ঘ। আপনি যদি আমাকে বুঝে থাকেন, আমি সার্থক, না বুঝে থাকলেও ক্ষতি নেই, এটা বলার জন্য আরেকদিন আপনার সামনে হাজির হবার একটা অজুহাত পাবো।
ভালো থাকুন। শুভরাত্রি।
বিনীত |
খলিল মাহ্মুদ |
From: Gomes, Subrata Augustine <AG21...@ncr.com> |
Subject: [কবিতাকথা:701] Re: [????????:651] Re: [????????:632] Re: ? ?? ??? ??????? |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|