An'am: 112-114

6 views
Skip to first unread message

Al-Quran Protidin

unread,
Oct 21, 2011, 4:04:42 AM10/21/11
to bangla...@googlegroups.com

সূরা আ-আনআম

আয়াত: ১১২-১১৪

Can’t read due to font problem? Please click here or visit www.aqpbd.com!

আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই অভিশপ্ত শয়তান থেকে; পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে শুরু করছি।

وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الْإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا ۚ وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ ۖ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ

১১২. এভাবে আমি মানুষ ও জিনের মধ্যে শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবীর শত্রুতে পরিণত করেছি।১১৪ তারা ধোঁকা দেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের একে অন্যকে চমকপ্রদ কথা দিয়ে প্রতারণা করে।১১৫ যদি তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করতেন তবে তারা এটা করতো না।১১৬ কাজেই তাদেরকে ও তাদের মিথ্যা রচনাকে তুমি বর্জন করো।

112. And so We have appointed for every Prophet enemies - Shayatin (devils) among mankind and jinns, inspiring one another with adorned speech as a delusion (or by way of deception). If your Lord had so willed, they would not have done it, so leave them alone with their fabrications.

১১৪. অর্থাৎ যখনই কোনো নবী দুনিয়াবাসীকে সত্যের পথ দেখাতে এগিয়ে এসেছেন তখনই সমস্ত শয়তানী শক্তি তাঁর মিশনকে ব্যর্থ করার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছে।

১১৫. চমকপ্রদ কথা বলতে সত্যের আহবায়ক ও তাঁর আহবানের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত ও বিরূপ মনোভাবাপন্ন করে তোলার জন্য যেসব কৌশল ও ব্যবস্থা অবলম্বন এবং যেসব সন্দেহ, সংশয় ও আপত্তি উত্থাপন করা হয় সেগুলোকে বুঝানো হয়েছে। তারপর সেসব কথাকে সামষ্টিকভাবে ধোঁকা ও প্রতারণা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কারণ সত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সত্যের বিরোধীরা যে অস্ত্রই ব্যবহার করে সেগুলো বাহ্যত অত্যন্ত শক্তিশালী ও সফল মনে হলেও তা শুধু অন্যদের জন্যই না, তাদের নিজেদের জন্যও আসলে ধোঁকা ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই হয় না।

১১৬. আল্লাহর ইচ্ছা বলতে কি বুঝায়: এখানে এ সত্যটি ভালভাবে বুঝে নিতে হবে যে, কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর ইচ্ছা ও চাওয়া এবং তাঁর সন্তুষ্টির মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। এটিকে উপেক্ষা করলে সাধারণভাবে অনেক বিভ্রান্তি দেখা দেয়। কোনো ব্যাপার আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী হওয়ার অর্থই এটা না যে, আল্লাহ পাক অবশ্যই তাতে সন্তুষ্ট আছেনমহান আল্লাহ কোনো ঘটনা ঘটার অনুমতি না দিলে, তাঁর মহাপরিকল্পনায় তা সংঘটিত হবার অবকাশ না রাখলে এবং সহযোগী ব্যবস্থাগুলোকে ঐ ঘটনাটি সংঘটিত করার অনুকূলে সক্রিয় না করলে পৃথিবীতে কোনো ঘটনাই সংঘটিত হয় না। আল্লাহ তালার অনুমোদন ছাড়া কোনো চোরের চুরি, হত্যাকারীর হত্যা, জালিম ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীর বিপর্যয় এবং কাফির ও মুশরিকের কুফরী ও শিরক সম্ভব না। অনুরূপভাবে কোনো মুমিন ও মুত্তাকী ব্যক্তির ঈমান ও তাকওয়াও আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া সম্ভব না। দু ধরনের ঘটনা একইভাবে আল্লাহর ইচ্ছায়ই সংঘটিত হয়। কিন্তু প্রথম ধরনের ঘটনায় আল্লাহ সন্তুষ্ট নন। আর দ্বিতীয় ধরনের ঘটনা তিনি পছন্দ করেন, ভালবাসেন এবং এর প্রতি তিনি সন্তুষ্ট।

মানুষের মন্দ কাজের ক্ষেত্রেও আল্লাহর ইচ্ছা বলতে কি বুঝায়? বিশ্ব-জাহানের একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছা অনুযায়ীই আলো ও আঁধার, ভাল ও মন্দ এবং সংস্কার ও বিপর্যয়ের বিপরীতমুখী শক্তিগুলোর পরস্পরের সাথে সংঘর্ষশীল হবার ফলেই সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক কল্যাণের পথ উন্মুক্ত হয়। তাই এ বৃহত্তর কল্যাণের ভিত্তিতেই তিনি আনুগত্য ও অবাধ্যতা, ইবরাহিমী প্রকৃতি ও নমরূদী প্রকৃতি, মূসার স্বভাব ও ফেরাউনী স্বভাব এবং মানবিক স্বভাব ও শয়তানী স্বভাব উভয়কেই কাজ করার সুযোগ দেন। তিনি নিজের স্বাধীন চেতনা ও ক্ষমতাসম্পন্ন সৃষ্টিকে (জিন ও মানুষ) ভাল ও মন্দের মধ্য থেকে কোনো একটি বাছাই করে নেয়ার স্বাধীনতা দান করেছেন। পৃথিবীর এ কর্মশালায় প্রতিটি মানুষ নিজের ইচ্ছামতো ভাল কাজ করতে পারে এবং খারাপ কাজও করতে পারে। আল্লাহর মর্জি ও ইচ্ছা যতদূর সুযোগ দেয়, যতদূর তিনি অনুমোদন দান করেন ততদূর পর্যন্ত উভয় ধরনের কর্মীরা পার্থিব উপায় উকপরণগুলোর সমর্থনও লাভ করে থাকে। কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে একমাত্র তারাই যারা ভাল ও কল্যাণের জন্য কাজ করে। আল্লাহর বান্দারা তাঁর দেয়া নির্বাচনের স্বাধীনতা ব্যবহার করে মন্দকে না - ভাল ও কল্যাণকে অবলম্বন করুক, এটাই আল্লাহ তালা ভালবাসেন।

সত্যের এতো বিরোধিতা কেন? সত্যের শত্রুদের বিরোধিতামূলক কার্যকলাপের উল্লেখ করতে গিয়ে মহান আল্লাহ বারবার নিজের ইচ্ছার বরাত দেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নবী করীম সা:কে এবং তাঁর মাধ্যমে মুমিনদেরকে একথা বুঝিয়ে দেয়া যে, মানুষের কাজের ধরন ফেরেশতাদের মতো না। ফেরেশতারা কোনো বিরোধিতা ও প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আল্লাহর হুকুম পালন করছে। অন্যদিকে দুষ্কৃতিকারী ও বিদ্রোহীদের মোকাবিলায় আল্লাহর পছন্দনীয় পদ্ধতিকে বিজয়ী করার প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালানোই হচ্ছে মুসলমানদের আসল কাজ। যারা আল্লাহর আনুগত্য ও সৎকাজ করছে তাদেরকে যেভাবে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছেন, আবার যারা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহাত্মক আচরণ করছে তাদেরকেও তা পুরোপুরি চালিয়ে যাওয়ার অবকাশ দিয়েছেন। অবশ্য তাঁর সন্তুষ্টি, দিক-নির্দেশনা, সমর্থন ও সাহায্য-সহায়তার হাত প্রসারিত রয়েছে তাদের দিকেই যাদের কাজ তিনি পছন্দ করেনকিন্তু এটি তাঁর রীতি নয় যে, তিনি প্রাকৃতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে যারা ঈমান আনতে চায় না তাদেরকে ঈমান গ্রহণে বাধ্য করবেন অথবা মানুষ ও জিন সম্প্রদায়ের এমন সব শয়তানকে জোরপূর্বক সব পথ থেকে সরিয়ে দেবেন, যারা নিজেদের সব উপায়-উপকরণ সত্যের পথ রোধ করার জন্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা কখনো হবার নয়। যারা সত্য, সততা, সৎবৃত্তি ও কল্যাণের জন্য কাজ করার সংকল্প করেছে তাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর বিরোধী ও মিথ্যা-পন্থীদের মোকাবিলায় অবিচল থেকে সংগ্রাম ও সাধনার মাধ্যমে নিজেদের সত্যপ্রিয়তার প্রমাণ তুলে ধরতে হবে। অন্যথায় মুজিযা, কারামতি ও অলৌকিক ক্ষমতার জোরে সব মিথ্যাকে নির্মূল ও সত্যকে বিজয়ী করাই যদি আল্লাহর উদ্দেশ্য হতো তাহলে তো আর মানব-সৃষ্টি, নবী-রাসূল, আসমানী কিতাব ইত্যাদির প্রয়োজন ছিল না। আল্লাহ নিজেই পৃথিবীর সমস্ত শয়তানকে উচ্ছেদ করে কুফরী ও শিরকের সম্ভাবনার সব পথ রুদ্ধ করে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারতেন।

وَلِتَصْغَىٰ إِلَيْهِ أَفْئِدَةُ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ وَلِيَرْضَوْهُ وَلِيَقْتَرِفُوا مَا هُم مُّقْتَرِفُونَ

১১৩. আর তারা (শয়তানরা লোকদেরকে) এ উদ্দেশ্যে প্ররোচিত করে যে, যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর যেন ঐদিকে আকৃষ্ট হয় এবং তাতেই যেন তারা পরিতুষ্ট হয়, আর তারা যে অপকর্ম করে তা-ই যেন তারা করতে থাকে।১১৭

113. (And this is in order) that the hearts of those who disbelieve in the Hereafter may incline to such (deceit), and that they may remain pleased with it, and that they may commit what they are committing (all kinds of sins and evil deeds, etc.).

১১৭. শয়তানের টার্গেট হলো তারাই যারা পরকালের ব্যাপারে সন্দিহান এবং তাদেরকে পুরোপুরি অবিশ্বাসীতে পরিণত করে অপরাধের কাজে মগ্ন রাখাই তার আসল সাফল্য - যাতে সে তাদেরকে জাহান্নামে তার চিরসঙ্গী হিসেবে পায়তাই যখনই কেউ অন্তরে শয়তানের প্ররোচনা টের পায় তখনই তার আল্লাহর ভয় এবং মৃত্যু, কবর, কিয়ামত, হাশর, জবাবদিহি ও পরকালের চিরস্থায়ী পরিণামের কথা স্মরণ করা উচিত।

أَفَغَيْرَ اللَّـهِ أَبْتَغِي حَكَمًا وَهُوَ الَّذِي أَنزَلَ إِلَيْكُمُ الْكِتَابَ مُفَصَّلًا ۚ وَالَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَعْلَمُونَ أَنَّهُ مُنَزَّلٌ مِّن رَّبِّكَ بِالْحَقِّ ۖ فَلَا تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ

১১৪. (হে মুহাম্মাদ সা:! তুমি বলো:) তবে কি আমি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মীমাংসাকারীর সন্ধান করবো? যদিও তিনিই তোমাদের প্রতি সুস্পষ্ট কিতাব অবতীর্ণ করেছেন!১১৮ যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা জানে যে, এটা তোমার প্রতিপালকের কাছ থেকে সত্য নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। কাজেই তুমি সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।১১৯

114. [Say (O Muhammad SAW)] "Shall I seek a judge other than Allah while it is He Who has sent down unto you the Book (The Quran), explained in detail." Those unto whom We gave the Scripture [the Taurat (Torah) and the Injeel (Gospel)] know that it is revealed from your Lord in truth. So be not you of those who doubt.

১১৮. এটি নবী করীম সা:এর উক্তিএখানে এ বক্তব্যের মর্ম হচ্ছে, আল্লাহ নিজের কিতাবে সুস্পষ্টভাবে এ সত্যগুলো ব্যক্ত করে দিয়েছেন এবং এ সিদ্ধান্তও জানিয়ে দিয়েছেন যে, অতিপ্রাকৃতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই সত্যপন্থীদেরকে স্বাভাবিক পথেই সত্যের বিজয়ের জন্য প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালাতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি কি আল্লাহ ছাড়া এমন কোনো সর্বময় ক্ষমতার অধিকারীর সন্ধান করবেন, যে আল্লাহর এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে এবং এমন কোনো মুজিযা পাঠাবে যার বদৌলতে মানুষ ঈমান আনতে বাধ্য হবে?

১১৯. অর্থাৎ ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করার জন্য এসব কথাবার্তা আজ নতুন করে রচনা করা হয়নিযারা আসমানী কিতাবগুলোর জ্ঞান রাখে এবং নবীদের মিশন সম্পর্কে যারা অবগত তারা একথার সাক্ষ্য দিবে যে, যা কিছু কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে তা সবই অকাট্য, আদি, আধুনিক, অকৃত্রিম, অবিকৃত, সংরক্ষিত, সর্বজনীন, পরীক্ষিত (cross-examined) ও চিরন্তন সত্য

মহান আল্লাহ তালাই সবচেয়ে ভালো জানেন

--- দয়াময় আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর পবিত্র বাণীর মর্মার্থ অনুধাবন ও তা মেনে চলার তৌফীক দিন। আমীন!

আগের আয়াতগুলো পড়তে ক্লিক করুন: আ ল - কু র আ ন   প্র তি দি ন

Please visit the own site of Al-Quran Protidin @ www.aqpbd.com

Reply all
Reply to author
Forward
0 new messages