Effects of Hajj (Total)

8 views
Skip to first unread message

Al-Quran Protidin

unread,
Oct 7, 2011, 1:47:10 PM10/7/11
to bangla...@googlegroups.com

একজন মুসলিমের অন্তর ও জীবনে হজ্জ পালনের প্রভাব

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে শুরু করছি

Can’t read due to font problem? Please click here or visit http://www.aqpbd.com!

হজ্জের বিভিন্ন আবশ্যকীয় অনুষ্ঠানগুলো পালনের অনেক গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য রয়েছে। যিনি এগুলো বুঝে-শুনে পালন করতে সক্ষম হন তিনি তাঁর অন্তর ও জীবনে এর উত্তম প্রভাব ও কার্যকর ফলাফলগুলো উপলব্ধি করতে পারেন। পর্যায়ক্রমিকভাবে সেগুলো এখানে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে।

. হজ্জে যাত্রার শুরুতে: পবিত্র হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে নিজ বাসস্থান থেকে - আল্লাহর ঘর বাইতুল্লাহ ও আরাফাতের ময়দান যেখানে - সেই পবিত্র মক্কা নগরীর দিকে যাত্রার শুরুতেই হাজী সাহেবদের অন্তরে মহান আল্লাহ তালা ও আখিরাতের দিকে তাঁদের যাত্রার কথা মনে পড়ে যায়। যখন তাঁরা তাঁদের পরিবার-পরিজন, সন্তান, আপনজন, তাঁদের ব্যবসা, ধন-সম্পদ ও নিজ দেশ ত্যাগ করে যাত্রা শুরু করেন - এটি যেন তাঁদের চিরদিনের জন্য এই পৃথিবী ছেড়ে পরকালের আসল গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রার এক মহড়ার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

. হজ্জের পাথেয়: হজ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রার সময় সবাই নিজে জেনে-বুঝে ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে ধারনা নিয়ে খুবই সতর্কতা ও যত্নের সাথে এবং হিসেব করে তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও পাথেয় সাথে নিয়ে যান। পাথেয় সংগ্রহ ও সাথে রাখার উদ্দেশ্য এটাই যে, যাতে আল্লাহর ঘরে নিরাপদে গিয়ে পৌঁছতে এবং সেখানে সব অনুষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে এগুলোর সাহায্য নেয়া যায়। এটিও আখিরাতে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতির কথা হাজী সাহেবদের মনে করিয়ে দেয়। এ সম্পর্কে মহান রাব্বুল আলামীন বলেন:

তোমরা (হজ্জের জন্য) পাথেয় সাথে নিও। আত্মসংযমই (তাকওয়া) হলো শ্রেষ্ঠ পাথেয়।

And take a provision (with you) for the journey, but the best provision is At-Taqwa (piety, righteousness, etc.).

সূরা আল-বাকারাহ: ১৯৭

. হজ্জে ভ্রমণকালীন পরিশ্রম ও কষ্ট: হজ্জের উদ্দেশ্যে ভ্রমণের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক সমস্যা, বাধা, পরিশ্রম ও কষ্টের সম্মুখীন হতে হয় - যা ঠিক যেন দুনিয়া থেকে আখিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রার মতোই। সেখানে একজন মানুষের সামনে থাকে যেকোনো মুহূর্তে মৃত্যুর দুশ্চিন্তা, স্বয়ং মৃত্যু, কবরের জীবন, হাশরের ময়দানে একত্রিত হওয়া, জবাবদিহি, হিসাব-নিকাশ, মীযান (তুলাদণ্ড), আস্‌-সীরাত (জাহান্নামের ওপর এক সেতু, যার ওপর দিয়ে সবাইকে যেতে হবে), তারপর জান্নাত অথবা জাহান্নাম। চির সৌভাগ্যবান সে-ই যাকে মহান আল্লাহ সেদিন রক্ষা করবেন।

. ইহরামের কাপড় পরা: হাজী সাহেবগণ যখন ইহরামের উদ্দেশ্যে সেলাইবিহীন সাদা দুটুকরো কাপড় পড়েন তখন তাঁদের অন্তরে এটি সেইদিনের কথাই মনে করিয়ে দেয় যেদিন তাঁকে এমনভাবেই কাফনের কাপড় পরানো হবে। এটি তাঁকে গুনাহর কাজ পরিত্যাগ করতে উৎসাহিত করে। তিনি যেমন তাঁর শরীরকে সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন ঠিক তেমনি তিনি তখন থেকে তাঁর গুনাহগুলোকেও ঢেকে ফেলা (পরিত্যাগ করা) উচিত। তিনি যেমন করে সাদা দুটি কাপড় দিয়ে তাঁর দেহ এবং অঙ্গগুলোকে ঢেকে দেন ঠিক তেমনি তখন থেকে তাঁর অন্তর ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো থেকে সব ধরনের গুনাহর দাগগুলো মুছে ফেলা উচিত।

. তালবিয়া পাঠ: ইহরামের জন্য নির্দিষ্ট স্থান (মীকাত) যখন তিনি অতিক্রম করেন এবং বলতে থাকেন লাব্বাইক! আল্লাহুম্মা লাব্বাইক! হাজির! হে আল্লাহ, আমি হাজির! যার অর্থ দাঁড়ায় এই যে, তিনি তাঁর মহান প্রতিপালক আল্লাহ সুব্‌হানাহু ওয়াতালার ডাকে সাড়া দিয়েছেন - তারপর থেকে তিনি আর কিভাবে কোনো গুনাহর কাজে লিপ্ত বা জড়িত হতে পারেন?  আল্লাহর কাছে হাজির হবার আরেক অর্থই হলো: হে আল্লাহ! আমি তোমার সব নিষিদ্ধ কাজগুলোকে পরিত্যাগ করে শুধু তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তোমার কাছে চলে এসেছি। কাজেই গুনাহ পরিত্যাগ করার কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়ার তখনই সময়।

. ইহরাম পালন: ইহরাম পালনের সময় একজন হাজী সাহেব যখন সব নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকেন এবং তালবিয়া পাঠ ও আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত থাকেন তখন এটি একজন মুমিনের সার্বক্ষণিক জীবন চিত্র তুলে ধরে। এভাবেই তিনি তাঁর দৈনন্দিন জীবনে দীনের প্রশিক্ষণ ও শৃঙ্খলার অনুশীলন করার সুযোগ পান কারণ তখন তিনি এমন কিছু কাজকে পরিহার করে চলছেন যেগুলো স্বাভাবিক সময়ে অনুমোদিত, কিন্তু ঐ অবস্থায় মহান আল্লাহ তালা সেগুলো তাঁকে করতে নিষেধ করেছেন। তাই কিভাবে তিনি আর তাঁর ভবিষ্যৎ জীবনে আল্লাহর নির্ধারিত পবিত্র সীমা ও নিষেধগুলোকে লঙ্ঘন করতে পারেন?

. মসজিদুল হারামে প্রবেশ: তিনি যখন মসজিদুল হারামে প্রবেশ করে তাঁর সামনে আল্লাহর পবিত্র ঘর বাইতুল্লাহকে স্বচক্ষে দেখতে পান তখন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তাঁর অন্তরে এক অনাবিল শান্তি ও নিরাপত্তা অনুভব করেন। আসলে এ স্থানটিকে মহান আল্লাহ পাকই সমগ্র মানবজাতির জন্য নিরাপদ করেছেন। এই পরিস্থিতিটি তাঁর হৃদয়ে পুনরুত্থান দিবসের সেই নিরাপত্তার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যা মানুষকে সত্যের পথে চেষ্টা-সাধনা করে অর্জন করতে হয়। পরকালের সেই নিরাপত্তা লাভের সবচেয়ে বড় উৎস হলো তাওহীদের অনুশীলন এবং শির্‌ক বর্জন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:

যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শির্‌ক) দিয়ে কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই এবং তারাই সৎপথপ্রাপ্ত।

It is those who believe (in the Oneness of Allah and worship none but Him Alone) and confuse not their belief with Zulm (wrong i.e. by worshipping others besides Allah), for them (only) there is security and they are the guided.

সূরা আল-আনআম: ৮২

. হজ্‌রে আসওয়াদ চুম্বন: যখন একজন হাজী সাহেব তাঁর হজ্জ পালনের কোনো এক পর্যায়ে একটি ধর্মীয় রীতি হিসেবে হজ্‌রে আসওয়াদকে চুম্বন করেন তখন তিনি আসলে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি সুন্নতেরই অনুসরণ করেন। কিন্তু তিনি আবার বিশ্বাসের দিক থেকে আল্লাহ পাকের নির্দেশিত সীমাকে কখনো লঙ্ঘন করেন না। যেমন হযরত উমর রা: এই পবিত্র জান্নাতী পাথরটিকে চুমু দেয়ার সময় বলেছিলেন:

আল্লাহর শপথ! আমি জানি তুমি একটি পাথর ছাড়া আর কিছু না। তুমি কারো ক্ষতি করতে পারো না এবং উপকারও করতে পারো না। আমি রাসূলুল্লাহ সা:কে তোমায় চুমু দিতে না দেখলে আমিও তোমায় চুমু দিতাম না।

সহীহ আল-বুখারী, ২য় খণ্ড, কিতাবুল হজ্জ, হাদীস নং - ১৫০১

. তাওয়াফ করা: বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করার সময় হাজী সাহেবদের স্মরণ হয় মানবজাতির পিতা হযরত ইবরাহীম আ:কে, তাঁদের মনে পড়ে যায় কিভাবে তিনি মহান আল্লাহর নির্দেশে এই কাবাকে সমগ্র মানব জাতির নিরাপত্তা স্থান হিসেবে ও হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে নির্মাণ করেছিলেন। তারপর এখানে হজ্জ করতে এসেছেন হযরত মূসা আ: এবং তারপর হযরত ঈসা আ:ও। সবশেষে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা:ও এই বাইতুল্লাহর হজ্জ পালন করতে মানবজাতিকে আহবান করে গেছেন। তাই সব নবী আ:দের পথ-নির্দেশের ধারা এবং সমগ্র মানব জাতির সর্বজনীন ঐক্য, বৈশ্বিক ভ্রাতৃত্ব বোধ এবং আলোর দিশা লাভের একমাত্র উৎস যে ঐ এক আল্লাহ তালা - একথাটিই হাজী সাহেবদের মনে পড়ে যায়।

১০. জমজমের পানি পান: যখন একজন হাজী সাহেব জমজমের পানি পান করেন তখন এটি মহান আল্লাহ পাকের সেই করুণা ও অনুগ্রহের কথা মনে করিয়ে দেয় যা তিনি আমাদের মাতা হযরত হাজেরা ও তাঁর ছেলে হযরত ইসমাঈল আ:এর উছিলায় সমগ্র মানব জাতির জন্য কিয়ামত পর্যন্ত জারী রেখেছেন। এমন শুষ্ক কঠিন মরুভূমির বুকে এই সুপেয় পানির ধারা লক্ষ-কোটি মানুষ যুগের পর যুগ ধরে পান করে চলেছে কিন্তু আজ পর্যন্ত তার এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি, হবেও না। এটি অত্যন্ত বরকতপূর্ণ পানি, মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক জাজ্বল্যমান মুজিযা।

১১. সায়ী করা: সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝে সায়ী করার সময় সেই কঠিন বিপদের কথা হাজী সাহেবদের মনে পড়ে যায় যে কষ্টে পড়েছিলেন আমাদের মাতা হযরত হাজেরা। কিভাবে তিনি ঐ শুকনো মরুভূমিতে তাঁর তৃষ্ণার্ত শিশু সন্তান হযরত ইসমাঈল আ: ও নিজের জন্য এক ফোঁটা পানির সন্ধানে দৌড়চ্ছিলেন। ঐ মহীয়সী মহিলা অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে এক আল্লাহ-মুখী হয়ে তাঁর পরীক্ষার মোকাবিলা করেছিলেন। তাই এখানে রয়েছে অনেক শিক্ষা। কোনো বিপদগ্রস্ত পুরুষ যখন তাঁর ধৈর্য ও চেষ্টা-সাধনার কথা স্মরণ করেন তখন নিজের দুঃখ-কষ্টকে অনেক ছোট মনে হবে, আর যখন কোনো মহিলার হযরত হাজেরার ঐ পরিস্থিতির কথা স্মরণ হয় তখন তাঁর সহ্য ও চেষ্টা-সাধনার শক্তি বাড়বে এবং সব অবস্থায় আল্লাহর দিকেই ফিরে আসার অভ্যাস গড়ে উঠবে।

১২. আরাফাতের ময়দান: হজ্জের একটি অন্যতম মূল কাজ হিসেবে লক্ষ লক্ষ হাজী সাহেবগণ যেদিন আরাফাতের ময়দানে খোলা আকাশের নীচে সমবেত হন এটি তাঁদেরকে অবশ্যম্ভাবী আখিরাতের হাশরের ময়দানে মহান আল্লাহর সামনেই হিসাব-নিকেশের জন্য একত্রিত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। ওখানেই এতো লোকের ভিড়ে সূর্যের নীচে দাঁড়াতে কতো কষ্ট হয়, তাহলে সারা পৃথিবীর সব যুগের সব মানুষের তাদের মহান প্রতিপালকের সামনে খালি গায়ে ও খালি পায়ে দাঁড়িয়ে সমবেত হওয়ার সেই শেষ বিচারের দিনটি কেমন হবে? তা উপলব্ধি করে আগে ভাগেই সবাইকে আমাদের দিকে দ্রুত অগ্রসরমান ও অনিবার্য সে দিনটির জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি নিতে হবে।

১৩. বিদায় হজ্জের ভাষণ: আরাফাতের ময়দানে জাবালে রহমত (রহমতের পাহাড়) দেখে হাজী সাহেবদের মনে পড়ে যায় মহানবী সা:এর বিদায় হজ্জের ভাষণের সেসব অমূল্য ও অপূর্ব বাণীর কথা। বিশ্বনবী সা:এর সে নির্দেশ ও উপদেশগুলোকে নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার জন্য হাজী সাহেবগণ যেন সেখানে নতুন করে শপথ নেন। বিশেষ করে মহানবী সা:এর সেই গুরুত্বপূর্ণ আহবান: আমার একটি কথা হলেও তা তোমরা লোকদের কাছে পৌঁছে দাও - এ দায়িত্বটি পালনে অর্থাৎ হাজী সাহেবগণ দেশে ফিরে বাকি জীবনে প্রিয়নবী সা:এর বার্তাবাহকের মতো লোকদেরকে আল্লাহর পথে ডাকার কাজটি করার জোর চেষ্টা চালানোর সংকল্প করেন সেখানে।

১৪. জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপ: হজ্জের একটি কার্যক্রম হিসেবে জামারাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক কঙ্কর নিক্ষেপের মাধ্যমে হাজীগণ তাঁদের ওপর ক্রিয়াশীল মানুষের চিরশত্রু অভিশপ্ত শয়তান এবং নিজেদের নফ্‌সের কুমন্ত্রণাগুলোকেই মন থেকে ঘৃণা করতে শিখেন। তাছাড়া এর মাধ্যমে আসলে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ সা:এর প্রতিটি কাজকে ঠিক তাঁরই মতো করে পালন করার প্রশিক্ষণও হয়ে থাকে। তাহলে হাজী সাহেবদের কারো পরবর্তী জীবনে আর কখনো কি কোনো বিদআতে (innovations) জড়িত হওয়া শোভা পেতে পারে?

১৫. পশু কুরবানী: হজ্জের একটি ঐতিহাসিক রীতি হিসেবে পশু কুরবানীর সময় হাজী সাহেবদের মনে পড়ে যায় আমাদের পিতা হযরত ইবরাহীম আ: ও তাঁর ছেলে হযরত ইসমাঈল :এর কথা। কেমন ছিল আল্লাহর প্রতি তাঁদের আনুগত্য, আত্মত্যাগ ও ধৈর্যধারণের নমুনা! এমন কোনো কিছুই তাঁরা করেননি যা মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ বা পছন্দের পরিপন্থী। আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ শোনার পর হযরত ইসমাঈল আ:এর উক্তিটিতেও রয়েছে অনেক শিক্ষা:

সে বললো: হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা-ই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।

He said: “O my father! Do that which you are commanded, Insha’ Allah (if Allah will), you shall find me of As-Sabirin (the patient ones, etc.).”

সূরা আস্‌-সাফ্‌ফাত: ১০২

১৬. ইহরাম শেষে: ইহরাম থেকে মুক্ত হলে যখন একজন হাজী তাঁর ওপর যে কাজগুলো নিষিদ্ধ ছিল সেগুলো করার অনুমতি পান তখন তিনি আনন্দ অনুভব করেন। এটি তাঁকে সবসময় মহান আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার মাধ্যমে তৃপ্তি ও শান্তি লাভ করতে শিখায়। তাছাড়া,

অবশ্যই প্রত্যেক কষ্টের সাথেই রয়েছে স্বস্তি

Verily, with the hardship, there is relief

সূরা আল-ইনশিরাহ:

একথাটিও এখানে উপলব্ধি করার সুযোগ রয়েছে। যেমন, ইফতারের সময় একজন সায়েম (রোযাদার), সারা রমাদান মাস ইবাদাত করার মাধ্যমে গুনাহ মাফ করিয়ে ঈদের দিনে এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ আদায়কারী দিনের আলোতে প্রতিদিন আল্লাহর সাহায্য অনুভব করে আনন্দ লাভ করেন।

১৭. হজ্জ শেষে: যখন একজন হাজী সাহেব হজ্জের সবগুলো অনুষ্ঠান সঠিক ও সুচারুভাবে সমাপ্ত করেন তখন তৃপ্তির সাথে তাঁর অন্তরে তাঁর জীবনের সব গুনাহগুলো মাফ হয়ে যাওয়ার আশা জাগে। যেমন, মহানবী সা: বলেছেন:

যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ সমাপন করলো এবং হজ্জ সম্পাদনের সময় কোনো প্রকার অশ্লীল কথা ও কাজে কিংবা গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়নি, সে সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে প্রত্যাবর্তন করলো।

সহীহ আল-বুখারী, ২য় খণ্ড, কিতাবুল হজ্জ, হাদীস নং - ১৪২২

নিষ্পাপ হয়ে যাওয়ার এ অনুভূতিটি হাজী সাহেবদের পরবর্তী জীবনে গুনাহ ও সীমালঙ্ঘনমুক্ত এক নতুন অধ্যায় রচনা করার প্রেরণা যোগায়।

১৮. বাসস্থানে ফিরে: হজ্জ শেষে নিজ বাসস্থানে ফিরে একজন হাজী সাহেব তাঁর স্ত্রী, সন্তান ও আপনজনদের সাথে মিলিত হয়ে আনন্দ লাভ করেন। এ অনুভূতিটি তাঁর হৃদয়ে একথা মনে করিয়ে দেয় যে, তিনি যেন আখিরাতে চিরদিনের সে জান্নাতে এভাবে আপনজনদের সাথে পুনর্মিলিত হবার স্বাদ পেতে পারেন। এলক্ষ্যে তিনি এখন থেকে তাঁর গোটা পরিবারকে, পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে জান্নাতী হবার জন্য উপযুক্ত জীবন গড়ার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

১৯. বিশ্ব-ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য: সর্বোপরি হজ্জ একজন মুমিনের সামগ্রিক জীবনে নিজের গোত্র, জাতি, ভাষা, বর্ণ, অঞ্চল, দেশ এবং মহাদেশের ঊর্ধ্বে উঠে সর্বজনীন বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব, পারস্পরিক পরিচয়, যোগাযোগ ও সহযোগিতা, অপরকে অগ্রাধিকার, ও ঐক্যবদ্ধ জীবন যাপনের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব মানবতার নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনা প্রদানের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই হাজী সাহেবগণ মুসলিম উম্মাহর সামষ্টিক এই গুরুদায়িত্ব পালনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ও সাধনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন।

# হজ্জযাত্রী হিসেবে নিজে পড়ুন এবং পরিচিতদের কাছে মেইল করতে পারেন।

মহান আল্লাহ আপনাদেরকে সুস্থ রাখুন, সব অসুবিধাগুলোকে দূর করে দিন, হজ্জের সব নিয়ম-কানুনগুলো আদায় করাকে সহজ করে দিন এবং হজ্জে-মাবরূর (ত্রুটিমুক্ত হজ্জ) হিসেবে আপনাদের ইবাদাতগুলো কবুল করুন - যার একমাত্র পুরস্কার হলো জান্নাত। আমীন!

Reply all
Reply to author
Forward
0 new messages