ম্যাপিং বাংলাদেশ কমিউনিটির অন্যতম তারকা ম্যাপার ডাঃ জায়েদ বিন আনোয়ার। ২২ শে জুন ২০১৪ এর পরিসংখ্যান অনুসারে তিনি
২২ হাজার ১৯৭ টি এডিট এবং ১০ হাজার ৫৪ টি রিভিউ করেছেন। মাস্টার এডিটর ও রিভিউয়ার খ্যাত এই ম্যাপার ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা এবং বর্তমানে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে প্রভাষক পদে কর্মরত। তিনি ম্যাপিং বাংলাদেশ কমিউনিটির নরসিংদি জেলার জেলাপ্রধান এবং পর পর ৩ বার সেরা জেলাপ্রধান হিসাবে অাখ্যায়িত হন। ২০১২ সালের প্রথম দিকের কথা হঠাৎ করেই শখের বশে গুগুল ম্যাপে ঢুকে পড়েন, প্রথম ম্যাপিং সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন,
“ম্যাপে আমার বাড়ির আসে পাশের অনেক স্থাপনা দেখে অবাক হয়ে যাই। তখনই ঠিক করি আমার বাড়িটা ম্যাপে যোগ করতে হবে। এক বন্ধুর সহায়তায় কিভাবে ম্যাপিং করতে হয় তার সামান্য জ্ঞান নিয়ে ম্যাপিং শুরু করি। শুরু থেকেই ভুল হচ্ছিল ক্যাটাগরি ঠিক হচ্ছিল না। বাড়ি যোগ করতে গিয়ে সেখানে আমার মোবইল নাম্বার ও মেইল এড্রেস দিয়ে দিই। হঠাৎ করে আমার মোবাইলে একটি কল আসে। ফোনরিসিপ করার পর শুনতে পাই আমি হাসান সাহেদ বলছি বাংলাদেশে গুগুল ম্যাপ মেকার কমিটির পক্ষ থেকে তিনি জানতে চান আমার ম্যাপিং করার ইচ্ছে আছে কিনা যদি থাকে তাহলে তিনি ম্যাপিং করতে আমাকে সহায়তা করবেন তারপর তিনি ম্যাপিং বাংলাদেশ এর ওয়েবসাইটির ঠিকানা দিয়ে আমাকে ভালভাবে দেখতে বলেন এবং সেই অনুযায়ী ম্যাপিং করতে বলেন এবং কোন সমস্যা হলে তাকে জানাতে বলেন। তারপর থেকেই ম্যাপিং এর পথচলা শুরু । এভাবেই আসলে ম্যাপিং আসা।”
ডাঃ জায়েদ সারা বাংলাদেশে অবদান রাখলেও ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, পটুয়াখালী এলাকায় বেশী অবদান রেখেছেন। এডিটের ক্ষেত্রে তিনি সাধারনত ব্যাংক, এটিএম বুথ, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, রাস্তা-ঘাট ইত্যাদিকে বেশী প্রাধান্য দেন। ম্যাপিং বাংলাদেশের সাথে সম্পৃক্ততার ইতিহাস জানাতে গিয়ে তিনি বলেন,
“২০১৩ সালে ঢাকাতে প্রায় ১০-১২টি ম্যাপআপ প্রোগ্রাম হয়। তার সব কয়টিতেই আমি অংশগ্রহন করি। ঢাকা ইউনিভার্সিটির একটি ম্যাপ আপ প্রোগ্রামে আমার সাথে হাসান শাহেদ ভাই, মাসুদ ভাই, টিপু ভাই, জামান সাহেব এর পরিচয় হয়। সেখানে হাসান ভাই জানতে চান তার কথা আমার মনে আছে কিনা তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন আমি বলেছিলাম তার পর থেকেই আমার ম্যাপিং এ আসা। এইখান থেকেই মাসুদ ভাই ও টিপুর ভাই এর সাথে পরিচয় হয় এবং প্রতিটি ম্যাপআপ প্রোগামে ওনাদের দুইজনের সাথে দেখা হয়। সেই থেকেই তাদের সাথে আমার খুবই আন্তরিক সর্ম্পক গড়ে উঠে। আমার ইডিট গুলোর সবচেয়ে বেশি রিভিউ করেছেন দাউদ করিম ভাই, এজন্য ওনাকে আমি ধন্যবাদ দিয়ে একটি মেইল পাঠাই, ফিরতি মেইলে তিনি আমাকে ম্যাপিং-এ সবধরনের সহযোগীতার আশ্বাস্থ দেন। দাউদ করিম ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে, মাসুদ ভাইয়ের ফোন পেয়ে আমি সেখানে যাই যেয়ে দেখি হাসান সাহেদ ভাই, দাউদ ভাই, মাসুদ ভাই সহ আরো অনেকে। দাউদ ভাই খুবই মজার মানুষ এবং মিশুক প্রকৃতির। বাংলাদেশ ম্যাপিং কমিটির আরেক তারকা হচ্ছেন তানজিল ভাই ওনার সাথে আমার সরাসরি দেখা বা কথা হয়নি, কিন্তু হঠাৎ ওনি ওনার বিয়েতে আমাকে দাওয়াত দেন, দাওয়াত পাওয়াতে নিজেকে খুব বড় মাপের ম্যাপার ম্যাপার মনে হচ্ছিল যদিও ওনার বিয়েতে আমি যেতে পারিনি তবে যাওয়ার খুবই ইচ্ছে ছিল। বাংলাদেশ ম্যাপিং কমিটির শ্রদ্ধেয় জামান সাহেব, হাসান সাহেদ ভাই দাউদ ভাই, মাসুদ ভাই টিপু ভাই, তানজিল ভাই ওনারা সবাই খুবই আর্ন্তরিক। আমার ম্যাপিং সম্পর্কিত যে কোন সমস্যা জানালে ওনারা সাথে সাথে তার সমাধান করে দেন। যার কথা না বললেই না আমাদের দাউদ করিম ভাই ওনাকে গভীর রাতে ফোন করে কোন সমস্যার কথা বললে ওনি এতটুকু বিরক্ত বোধ করে না ”
ম্যাপমেকারে আগত নতুন ম্যাপারদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ রেখে তিনি বলেন,
“বাংলাদেশের ম্যাপটি আমাদের সকলের তাই এখানে ভুল করলে আন্তজার্তিক পর্যায়ে আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন হয়। তাই উচিত ভালভাবে দেখে, ঠিকমত শিখে ম্যাপিং করা এবং প্রতিটি ম্যাপআপ প্রোগ্রামে নতুনদের অংশগ্রহন করা। ম্যাপআপ প্রোগ্রাম থেকে অনেক কিছু নতুন শিখা যায়। ম্যাপিং করাটা আসলে নেশার মত একবার কম্পিউটারে বসলে আর উঠতে ইচ্ছে করে না। আমি দৈনিক কিছুটা সময় আলাদা করে রাখি ম্যাপিং করার জন্য। বাংলাদেশ ম্যাপিং কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য প্রথমেই যা দরকার তা হল একটি অফিস নেয়া। যেখান থেকে কমিটির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করা হবে এবং প্রতিমাসে অন্তত একবার জেনারেল ম্যাপারদের নিয়ে মিটিংয়ের ব্যবস্থা করা এবং নতুন ম্যাপারদের ফলোআপ দেওয়া তাদের কোন সমস্যা হলে তার সমাধান করা।”
ডাঃ জায়েদ সম্পর্কে কমিউনিটির প্রধান নির্বাহী হাসান শাহেদ জানান, ”ডাঃ জায়েদ ম্যাপিং বাংলাদেশ কমিউনিটির গৌরব এবং একজন ডেডিকেটেড ম্যাপার। বাংলাদেশের ম্যাপ সমৃদ্ধকরণে তার অবদান প্রশংসনীয়। তার মত আরো কিছু ডেডিকেটেড ম্যাপার তৈরী করা গেলে বাংলাদেশের ম্যাপ দ্রুত সমৃদ্ধ হবে।”